আশাশুনিরাজনীতিশ্যামনগরসাতক্ষীরা জেলা

মির্জা ইয়াছিন আলী: সংগ্রামের প্রান্তর থেকে নেতৃত্বের শিখরে

তারেক রহমানের হাতে গড়া মির্জা ইয়াছিন আলীকে সাতক্ষীরা ৩ আসনের ধানের শীষের কান্ডারী হিসেবে দেখতে চায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

এম আব্দুর রহমান বাবু: বাংলাদেশের রাজনীতিতে একনিষ্ঠতা, আদর্শের প্রতি অটলতা ও ত্যাগ-তিতিক্ষা যে কেবল কাগুজে নীতিকথা নয়, তা প্রমাণ করেছেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কৃতি সন্তান মির্জা ইয়াছিন আলী। তরুণ বয়সেই রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করে ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে জাতীয় রাজনীতির ভুবনে নিজের বলিষ্ঠ অবস্থান নিশ্চিত করেছেন তিনি। তারেক রহমানের ভিশন ‘সবার আগে বাংলাদেশ” প্রতিষ্ঠায় তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা ৩ আসনে (আশাশুনি, দেবহাটা কালিগঞ্জ)প্রার্থী হতে চান।

তারেক রহমানের হাতে গড়া মির্জা ইয়াছিন আলীকে উক্ত আসনের ধানের শীষের কান্ডারী হিসেবে দেখতে চায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন:
মির্জা ইয়াছিন আলীর জন্ম ১৯৮২ সালের ১ মে, সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার কোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম মির্জা শামসুর রহমান ও মাতা জাহানারা বেগমের স্নেহ ও আদর্শে বেড়ে ওঠেন তিনি। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় মাড়িয়ালা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে, যেখানে তিনি বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন এসএসসি (১৯৯৭)। পরবর্তীতে এইচএসসি (১৯৯৯)সম্পন্ন করেন শেখ আমানুল্লাহ কলেজ থেকে, মানবিক বিভাগে প্রথম শ্রেণি অর্জনের মধ্য দিয়ে।

শিক্ষাগত উৎকর্ষতার ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০০৫ সালে সেকেন্ড ক্লাসে বি.এস.এস এবং ২০০৭ সালে ফার্স্ট ক্লাস নিয়ে এম.এস.এস ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই তিনি ছিলেন সক্রিয় রাজনীতিতে, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে।(এস.এম. হল)।

ছাত্র রাজনীতি ও নেতৃত্বের সূচনা:
রাজনীতির হাতেখড়ি হয় ছাত্রদল থেকে। ২০০২-২০০৫ সালে এস.এম হল শাখার ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্বের প্রাথমিক পরিচয় দেন তিনি। পরবর্তীতে সেনা সমর্থিত ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময় সহ ২০০৫-২০০৯ সাল পর্যন্ত ওই শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১২-২০১৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ এর নাট্য সম্পাদক এবং ২০১৪-২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ এর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

জাতীয় রাজনীতিতে উত্তরণ:
ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসে বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংগঠনিক দক্ষতা, সাংস্কৃতিক চেতনা, সততা এবং নেতৃত্বের গভীরতা তাঁকে এই পদে নিয়ে এসেছে।

সংগ্রাম ও নিপীড়নের ছায়া:
রাজনীতির পথ কখনোই সহজ ছিল না মির্জা ইয়াছিন আলীর জন্য। সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত মোট এক ডজন মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং দুইবার কারাভোগ করতে হয়েছে। ২০১১ সালের ১১ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলন চত্বরের পাশে সর্বপ্রথম ছাত্রনেতা হিসেবে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাতে নির্মম সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন মির্জা ইয়াছিন আলী।ব্যক্তিজীবনে সততা ও সরলতা তাকে পরিচিত করেছে একজন গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে। বর্তমানে তিনি ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় বসবাস করছেন।

মির্জা ইয়াছিন আলী শুধুমাত্র একজন রাজনৈতিক নেতা নন, বরং তিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক সাহসী যোদ্ধা। শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং আত্মত্যাগের মিশেলে গঠিত তার রাজনৈতিক জীবনবৃত্তান্ত নতুন প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে। আগামী দিনে তার অভিজ্ঞতা, নেতৃত্বগুণ এবং সংগ্রামের ইতিহাস জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, এ প্রত্যাশা সাতক্ষীরা ৩ আসনের সাধারণ মানুষের এবং দেশের আপামর জনতার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *