অপরাধআইন আদালতআন্তর্জাতিককালিগঞ্জজীবনযাপনসাতক্ষীরা জেলা

ইতালি পাঠানোর নামে কালিগঞ্জের এক যুবককে লিবিয়ায় আটক রাখার অভিযোগ

এসএম গোলাম ফারুক, কালিগঞ্জ: ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে সোবহান গাজী (৪০) নামে এক যুবককে লিবিয়ায় নিয়ে আটক ও অর্থ দাবির অভিযোগ উঠেছে শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামে এক লিবিয়া প্রবাসীর বিরুদ্ধে।

এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রতারকের কবল থেকে স্বামীকে রক্ষার জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী সোবহান গাজীর স্ত্রী সালমা শিরীন।

লিখিত অভিযোগে সালমা শিরীন জানান, ২০২৩ সালে ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের গণেশপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী গাজীর ছেলে লিবিয়া প্রবাসী শফিকুল ইসলাম আমার স্বামী সোবহান গাজীকে ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব দেন। একই গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামকে বিশ্বাস করে ইতালি যাওয়ার জন্য ১১ লাখ টাকা প্রদান করি।
পরবর্তীতে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে শফিকুল ইসলাম আমার স্বামীর নিকট থেকে আরও সাড়ে ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। একপর্যায়ে মোট ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমার স্বামীকে লিবিয়ায় নিয়ে আটকে রেখেছেন শফিকুল ইসলাম। বর্তমানে আমার স্বামী সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এসব বিষয়ে শফিকুল ইসলামের সাথে এবং দেশে থাকা তার দুই স্ত্রী রাবেয়া খাতুন ও মরিয়ম খাতুন, ছেলে ইমন গাজী ও মেয়ে ইভা খাতুনের সাথে কথা বললে তারা বিষয়টির কোন সমাধান করেনি। আমার স্বামীকে লিবিয়ায় পাচার করে দেবে বুঝতে পারলে কখনই আমার স্বামীকে শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে বিদেশে পাঠাতাম না। এ ঘটনায় লিবিয়া প্রবাসী শফিকুল ইসলাম ওরফে কেনা, তার দুই স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমার স্বামীকে রক্ষায় দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি বাংলাদেশ হাইকমিশন ও সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, শফিকুল ইসলাম ওরফে কেনা লিবিয়ায় থাকার কারণে আমাদের এলাকার অনেক মানুষ এবং বিভিন্ন জেলা বাসিন্দারা তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন বিদেশে যাওয়ার জন্য। ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন শফিকুল ইসলাম। তার দ্বারা প্রতারিত হয়ে অনেকেই এখন নিঃস্ব। এ ব্যাপারে তদন্তপূর্বক লিবিয়া প্রবাসী শফিকুল ইসলামসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা পয়োজন যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ প্রতারণার শিকার না হন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী মরিয়ম খাতুন বলেন, সোবহান গাজীকে ইতালি পাঠানোর জন্য চুক্তি ছিল। তবে লিবিয়া থেকে তাকে অনেকবার ইতালি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সুবাহান গাজী লিবিয়ায় আছেন বলে জানান তিনি।

কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *