কালিগঞ্জশিক্ষাঙ্গন

কালিগঞ্জে প্রধান শিক্ষক’র দুর্নীতির তদন্ত রিপোর্ট ধামাচাপা দেওয়ার গুঞ্জন

স্টাফ রিপোর্টার: কালিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বহুল আলোচিত ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক জি,এম শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতির তদন্ত রিপোর্ট ধামাচাপা দিতে তদন্তকারী দলের আহ্বায়ক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শংকর কুমারদে গংয়ের বিরুদ্ধে লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার গুঞ্জন উপজেলা জুড়ে।

তদন্ত দলের ওপর দুই সদস্য উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আকরাম হোসেন এই সুযোগে ঐ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ বাগাতে তদন্ত কারী দলের অপর সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাকি বিল্লাহের সহযোগিতায় সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডলের সংশ্লিষ্টতার গুঞ্জন এখন ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের মুখে মুখে। এর আগেও ভুক্তভোগীদের ভয়-ভীতি দেখে অভিযোগ প্রত্যাহার লিখিয়ে দুটি তদন্ত রিপোর্ট তার পক্ষে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

বিগত রকারের পতনের পর ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককে অপসারণ ও তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে রাস্তা অবরোধের সময় প্রকাশ্যে ভুক্তভোগীরা সেনা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাসের সামনে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে, ঘুষ, দুর্নীতির নানান তথ্য তুলে ধরে বক্তব্য দেয় শিক্ষার্থী, অভিভাবক সহ ভুক্তভোগীরা। ঐ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিষয়টি উপজেলা ছাত্র সমন্বয়কদের মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করেন।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগ দিতে বললে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক এবং এলাকাবাসী লিখিতভাবে দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অনুজ মণ্ডল স্বাক্ষরিত গত ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর ০৫-৪৪-৮৭৪৭,০০০,৩২,০০৩,২৪,১১২৫ নং স্মারকে সরে জমিনে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন ।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শঙ্কর কুমার দে এবং সদস্য সচিব হিসেবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাকি বিল্লাহ ও সদস্য হিসেবে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আকরাম হোসেনকে দায়িত্ব দেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর দীর্ঘ সময় তালবাহানা করে গত সপ্তাহে দায়সারা ভাবে তদন্তকারী দল স্কুলে গেলেও কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করেনি বরং উল্টো অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক শফিকুলের পক্ষে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য দেন দরবার চলতে থাকে। বিষয়টি জানতে পেরে স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং এলাকাবাসী তদন্তকারী দল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট মৌখিকভাবে অভিযোগ করে বলে ভুক্তভোগীরা এ প্রতিনিধিকে জানায়।

গত আগস্টের পর থেকে প্রধান শিক্ষক পলাতক এবং বিদ্যালয়ে হাজির না হলেও ঠিকমতো অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি এবং তদন্তকারী দলের সঙ্গে ঠিকই দহরম -মহরম সম্পর্ক চালিয়ে আসলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসাবে কোন প্রকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রধান শিক্ষক আজও পর্যন্ত ঠিকই বেতন ভাতা ভোগ করে আসছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেফালী পারভিন, রানী, বিলকিস ,ইয়াসমিন অভিভাবক রবিউল ইসলাম, আজিনুর, আব্দুল কাদের, শিক্ষক আব্দুস সালাম ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেন, হাবিবুর রহমান, এলাকার জনপ্রতিনিধি সহ একাধিক ব্যক্তি এ প্রতিনিধিকে জানায় গত আগস্টের পর হতে আমরা আওয়ামী লীগের দোসর দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আজো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বরং স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও ঠিকমতো বেতন ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছে। বর্তমানে ঐ শিক্ষকের নিকট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে বাঁচানোর জন্য তদন্ত রিপোর্ট তার পক্ষে দেওয়া হয়েছে এমনই আমরা জানতে পেরেছি । বিষয়টি যদি সত্য হয় তাহলে রমজানের পর হইতে দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম এবং তার পক্ষে কাজ করা সহযোগীদের বিরুদ্ধে লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে কালিগঞ্জকে অচল করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে।

এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ শংকর কুমার দে’র নিকট জানতে চাইলে তিনি দায় এড়ানোর তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছি এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট কথা বলতে বলেন।

তদন্তকারী দলের সদস্য সচিব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাকি বিল্লাহ নিকট জানতে চাইলে তিনি তদন্ত রিপোর্টে শুধুমাত্র সই করার বিষয়টি এ প্রতিনিধিকে জানিয়ে এর বেশি কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান।

তদন্ত দলের অপর সদস্য উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আকরাম হোসেন ছুটিতে আছেন বলে জানিয়ে বলেন আমরা ছোট মাথা । হুকুমের গোলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছি। বিষয়টি নিয়ে ওনার সঙ্গে কথা বলেন বলে জানান।

এ বিষয়ে অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মণ্ডলের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান এখনো রিপোর্ট আমার হাতে আসেনি । রিপোর্ট জমা দিলে হয়তো ফাইলে আছে । বিষয়টি আমি দেখে পরে জানাবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *