শ্যামনগরে শিশু শ্রম সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালার বাস্তবায়ন ও করনীয় শীর্ষক যৌথ সভা
স্টাফ রিপোর্টার: শ্যামনগরে শিশু শ্রম সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন ও করনীয় শীর্ষক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দাতা সংস্থা এডুকো ও এডি ফাউন্ডেশনের সহায়তায় উত্তরণের আয়োজনে এই সভা শ্যামনগর উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার সকালে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই যৌথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনি খাতুন।
বিশেষ অতিথির আলোচনায় আলোচনা করেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগের সহকারি মহাপরিদর্শক মো: শাহিনুর রহমান, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মো: রিয়াজুল ইসলাম, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আরিফুজ্জামান, সহকারি বন সংরক্ষক মশিউর রহমান, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: শাহিন হোসেন প্রমুখ।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে মিস রনি খাতুন বলেন, শিশুশ্রম সমাজের জন্য অন্যায় হলেও আমরা জানি বিভিন্ন উপায়ে আমাদের সমাজে এখনও তা বিদ্যমান। এই শিশুশ্রম বন্ধে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে যাচ্ছে। সরকার শিশুশ্রমকে শুন্যের কোঠায় নিয়ে শিশুশিক্ষাকে এগিয়ে নিতে চায়। শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। সরকারি বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি গণমাধ্যমের খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এখানে। সকলের প্রচেষ্টা আর সামগ্রিক সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতায় এই প্রকল্প সফল হবে। শিশুশ্রম অবশ্যই নিরোধ হবে। দেশ সমাজের ভবিষ্যত শিশুরা স্বপ্নের মতো করে বিকশিত হবে। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মনিরুজ্জামান জমাদ্দার। বিষয়বস্তুর আলোকে আলোচনা করেন দেশ টিভি’র সিনিয়র করেসপনডেন্ট শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন।
সমগ্র সভা সঞ্চালনা করেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শারিদ বিন শফিক। সভায় মুল প্রবন্ধ ও প্রকল্প চিত্র উপস্থাপন করেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক নাজমা আক্তার।
বিষয় ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দ্বিনেশ চন্দ্র মন্ডল, সিবিসিপিসি আব্দুল আজিজ গাজী, বেসরকারি সংগঠন কারিতাসের কর্মকর্তা এনড্রিকো মন্ডল, বিটিএসের নাসরিন সুলতানা, ফ্রেন্ডশিপের সাখাওয়াত হোসেন, ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আফজালুর রহমান, অভিভাবক সদস্য সাবিনা বেগম প্রমুখ।
প্রকল্প সমন্বয়কারী মনিরুজ্জামান জমাদ্দার বলেন, শিশুশ্রম নিরোধের ক্ষেত্রে বহুবিধ সংকট বিদ্যমান। বিশেষ করে ফাইনাল পরীক্ষার সময়ে ইটের ভাটায় থাকার কারণে শিশুরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। ফলে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হতে পারে না। শ্রমের সাথে যুক্ত থাকার কারণে বাল্য বিবাহ মাদক সেবন প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ঝরেপড়া ও শ্রমজীবী শিশুরা নিয়মিত স্কালে আসতে পাওে না ফলে উপস্থিতির হার কমে যায়। দরিদ্র পরিবার হওয়ার কারণে অভিভাবকরা শিশুদের শ্রমের সাথে যুক্ত রাখতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উত্তরণ শ্যামনগরে সরকারি প্রশাসনের সাথে নিয়মিত সভা ও যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। অভিভাবক ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে সভা করছে। কমিউনিটির জনগন ও শিশু সুরক্ষা কমিটির সাথে সভাও করছে। শিশু ও অভিভাবকদের সাথে নিয়ে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দিবস উদযাপন করে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে। চাকরীর মেলার মাধ্যমে চাকরি দাতাদের সাথে সমন্বয় সাধন করছে।