শ্যামনগরে কথিত মানবাধিকার নেত্রীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতার মৎস্য প্রকল্প দখল
সুলতান শাহাজান, শ্যামনগর: শ্যামনগরে কথিত এক মানবাধিকার নেত্রীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতা সোহেল আহমেদ মানিকের মালিকানাধীন মৎস্য প্রকল্প জবর দখলের করার অভিযোগ উঠেছে।
কথিত মানবাধিকার নেত্রীর শাহানারা খাতুন নামের ঐ নারী কখনও আবার সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পাশাপাশি ইতিপুর্বে আ’লীগ নেত্রী হিসেবে নিজেকে জাহির করতেন।
সম্প্রতি নিজস্ব পোষ্য সন্ত্রাসী খাইরুল, শহিদুল ও জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ২০/৩০ জন সন্ত্রাসীকে নিয়ে ৪২ বিঘা আয়তনের উক্ত প্রকল্পটি দখল করেন তিনি। এসময় প্রকল্পের বসতঘর ভাংচুর ও মাছ লুটে বাধা দেয়ায় এসব সন্ত্রাসীরা প্রকল্প পাহারায় থাকা কর্মচারী মাসুদ হোসেন (৩৪) কে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
খবর পেয়ে আহত মাসুদকে উদ্ধারে যাওয়ায় সন্ত্রাসীরা সোহেল আহমেদের ব্যবসায়িক অংশীদার জাকির হোসেনকেও বেদম মারপিট করে। গঠনার রাতেই আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সোহেল আহমেদ সাতক্ষীরা জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
জানা যায়, স্থানীয় জমি মালিকদের থেকে ডিড (লিজ) নিয়ে প্রায় তিন দশকের বেশী সময় ধরে মৎস্য প্রকল্প পরিচালনা করছেন জাকির হোসেন। তবে আর্থিক সংকটের মুখে প্রায় এক বছর পুর্বে তিনি উক্ত প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্ব সোহেল আহমেদ মানিকের অনুকুলে হস্তান্তর করেন। আর সে ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পাশের প্রকল্প মালিক শাহানারা খাতুন ও তার লোকজন লাভজনক উক্ত প্রকল্পের দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
একপর্যায়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা মধ্যস্থতার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
ঘটনার বিষয়ে সোহেল আহমেদ মানিক জানান, শ্যামনগর থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় বসার কথা বলে প্রতিপক্ষ অহেতুক সময় ক্ষেপন করছিলেন। একাধিকবার সময় দিয়ে সর্বশেষ শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্যমানগর থানায় বিবাদমান বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের বসার দিনক্ষন নির্ধারিত ছিল। তবে আকস্মিকভাবে শনিবার রাতে শাহানারা ও জাহাঙ্গীর ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে তার প্রকল্প দখল করে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে। এসয়য় বাধা দিতে যাওয়ায় কর্মচারী মাসুদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। মারপিট ও দখলসহ লুটপাটের পরও তার লোকজনকে হয়রানীমুলক মামলায় জড়ানোর হুমকি দিচ্ছে সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও আ’লীগ নেত্রী পরিচায়দানকারী উক্ত শাহানারা। এঘটনায় তিনি (সোহেল আহমেদ মানিক) শ্যামনগর থানায় লিখিত এজাহার জমা দিয়েছেন আসামীদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহানারা খাতুন বলেন, তিনি কিংবা তার লোকজন কারও উপর হামলা করেনি। নিজেরা নিজেদের রক্তাত্ত¡ করে ইস্যু তৈরীল চেষ্টা করছে। নিজেকে ভোমরা প্রেসক্লাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে শাহানারা খাতুন আরও বলেন আদালতে রয়েছেন, বের হয়ে পরে কথা বলবেন।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি (তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে দু’দফা কাগজপত্র নিয়ে বসার চেষ্টা করা হলেও নানা অজুহাতে শাহানারা খাতুন উপস্থিত হননি। এখন মৎস্য প্রকল্পে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটসহ কর্মচারীকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।