শ্যামনগরসাতক্ষীরা জেলা

শ্যামনগরে নারীর অধিকার ও জলবায়ুর পরিবতর্নের প্রভাব মোকাবিলায় গণসমাবেশ

শ্যামনগর প্রতিনিধি: নারীর অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি প্রদান , জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং বাল্যবিবাহ বন্ধের লক্ষ্যে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক ব্যতিক্রমী গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) এবং এ্যাম্বাসি অব সুইডেনের সহায়তায় বেসরকারি সংস্থা ‘লিডার্স’ এই সমাবেশের আয়োজন করে। ‘কমিউনিটি ভিত্তিক জলবায়ু সহনশীলতা ও নারীর ক্ষমতায়ন কর্মসূচী– সিআরইএ প্রকল্পের অধীনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে শ্যামনগর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রণী খাতুন।

প্রধান অতিথি রণী খাতুন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে নারী ও শিশুদের। তাই তাদের সুরক্ষায় আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। তিনি নারীর অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের অর্থনৈতিক মূল্য স্বীকার করার এবং বাল্যবিবাহ বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা হলেও এর সমাধান স্থানীয় পর্যায়ের মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সম্ভব। তিনি আরও বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়া একটি টেকসই সমাজ গঠন সম্ভব নয়।

সমাবেশে লিডার্স-এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এবি এম জাকারিয়া তিনি তাদের কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং নারীর অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি প্রদান , জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং বাল্যবিবাহ বন্ধের লক্ষ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।

এছাড়াও সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শারিদ বিন শফিক , উপজেলা প্রোগ্রাম অফিসার ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল (ওসিসি) প্রণব কুমার বিশ্বাস,পরিত্রাণ এর প্রোগ্রাম অফিসার নয়ন কুমার গাইন এবং নকশী কাঁথা’র নির্বাহী পরিচালক চন্দ্রিকা ব্যানার্জী। সমাবেশে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের মতামত তুলে ধরেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর অধিকার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

প্রকল্প কর্মকর্তা সুলতা সাহার সঞ্চালনায় উক্ত গণসমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা হাতের ছাপ দিয়ে নারীর অবৈতনিক গৃহস্থালী কাজের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি প্রদান এর দাবিতে প্রতিবাদে অংশ নেন।

এই গণসমাবেশটি নারীর অবৈতনিক কাজের মূল্যায়ন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *