অনলাইনধর্মসদরসাতক্ষীরা জেলা

যুব-নেতৃত্বে সংহতি বৃদ্ধি ও দ্বন্দ নিরসনে স্টেকহোল্ডারদের সাথে সংলাপ

স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরা সদরে যুব-নেতৃত্বে স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি ও দ্বন্দ নিরসনে ধর্মীয় নেতা ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (২৯ জুন) সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ি ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সিডো বাস্তবায়নে এবং একশনএইড বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় এফরটি প্রকল্পের আওতায় যুব-নেতৃত্বে স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি ও দ্বন্দ নিরসনে ধর্মীয় নেতা ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে সংলাপে ফিংড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।সংলাপে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সিডো সংস্থার প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাস।

সংলাপের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য উপস্থাপন করনে প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. তহিদুজ্জামান। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম সমিতি সাতক্ষীরা জেলা মাওলানা শেখ মাহববুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল্লাহ বিন হুসাইন, ফিংড়ি ঈমাম পরিষদের হাফেজ মাওলানা জাকির হোসেন, হাফেজ মাওলানা হাফিজুর রহমান, হাফেজ মাওলানা নাজমুল হুদা, ক্যাটেখিস্ট চালতেতলা মিশনের ডমেনিক মন্ডল, ফিংড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা গুলশান আরা, দক্ষিণ ফিংড়ি মন্দির কমিটির সভাপতি কমলেস সরদার, গাভা আইডিয়াল কলেজের প্রভাষক স্বপন কুমার মন্ডল, বিশ^নাথ কয়াল, ব্যাংদহা বাজার কমিটির সেক্রেটারী সঞ্জয় দাশ, জেডিএফ সভানেত্রেী ফরিদা আক্তার বিউটি, জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সাকিবুর রহমনা বাবলা, সাতক্ষীরা সাইবার ক্রাইম এলার্ট টিমের পরিচালক মাহবুবুর রহমান, ইউপি সদস্যবৃœদ জনপ্রতিনিধিগন সহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডারবৃন্দ ও যুব সদস্যবৃন্দ।

বক্তব্য রাখেন সবুজ পৃথিবী যুব সংঘের সভাপতি শিহাব সিদ্দীকি, লাল গোলাপ যুব সংঘের সদস্য আরাফাত হোসেন, সাতক্ষীরা ইয়ূথ হাবের সাধারন সম্পাদক নুরজাহান খাতুন, প্রান্তিক যুব সংঘের সদস্য ইমতি জামিল ও কর্নফুলি যুব সংঘের সভাপতি মোহাইমিন,মানুষ সামাজিক জীব। সবাই একসাথে মিলেমিশে বসবাস করলেই সমাজে শান্তি বজায় রাখা সম্ভব। সমাজে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সকলেই একসাথে কাজ করা উচিত। দ্বন্দ নিরসন এমন একটা উপায় যেখানে সকল বয়সের মানুষ একসাথে এবং একে অপরের কাছ থেকে শিখতে পারে। এটি আজীবন শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ, যেখানে প্রজম্মের পর প্রজন্ম্ দক্ষতা, মূল্যবোধ এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য একসাথে কাজ করে। জ্ঞান স্থানান্তরের বাইরে এটি বিভিন্ন প্রজম্মের মধ্যে পারস্পারিক শেখার সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং আমাদের বয়স্ক সমাজে সামাজিক মূলধন এবং দ্বন্দ সমাধান বিকাশে সহায়তা করে। দ্বন্দ সমাধানের লক্ষ্য হল উদ্দেশ্যমূলক, পারস্পারিক উপকারী কার্যকলাপে মানুষকে একত্রিত করা যা প্রজম্মের মধ্যে বৃহত্তর বোঝাপড়া এবং শ্রদ্ধা বৃদ্ধি করে ও দ্বন্দ সমাধানে অবদার রাখে।

আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের আঞ্চলিক দ্বন্দের আশঙ্কা রয়েছে, যেমন বিভিন্ন ধর্মের মানুষের অতি উৎসাহিত মনোভাবের কারনে সংঘাত, ধনী-দরিদ্রের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ, ত্বকের রঙ নিয়ে দ্বন্দ, রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে দ্বন্দ, জমি নিয়ে দ্বন্দ ইত্যাদী উল্লেখযোগ্য। ধমীয় নেতারা ও তরূনরা স্থানীয় এলাকার সামাজিক সম্প্রীতি নষ্টকারী সূচকগুলো চিহ্নিত করে একটি কর্ম-পরিকল্পনার মাধ্যমে সেগুলো সমাধানের উপায় খুজে বের করায় এই সংলাপের একমাত্র লক্ষ্য।

সংলাপের উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় নেতাদের সাথে আন্ত:সম্প্রদায় এবং আন্ত: প্রজন্মীয় প্রচারণা শুরু করে সমাজকে আর ও সহনীয় করে তোলা। সামাজিক শান্তি-সম্প্রীতি রক্ষা ও দ্বন্দ নিরসনের জন্য ধর্মীয় নেতা ও অন্যান্য প্লাটফর্মের মাধ্যমে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে কর্ম-পরিকল্পনা করে সেগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহন করা। স্থানীয় সামাজিক শান্তি-সম্প্রীতি কমিটিকে আর ও সক্রিয় করা।বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাথে সামাজিক কর্মকান্ডে যুবদের অংশগ্রহনের সুযোগ তৈরী করা।

প্রত্যাশা ও প্রস্তাবনা ছিল সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক শান্তি-সম্প্রীতি বৃদ্ধির জন্য ধর্মীয় নেতা এবং অন্যান্য সমমনা অংশীদারদের অংশগ্রহনে কর্ম-পরিকল্পনা তৈরী ও বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। স্থানীয় শান্তি-সম্প্রীতি কমিটিতে যুবদের অর্ন্তভুক্ত করা ও দ্বন্দ নিরসনে অবদান রাখার জন্য উৎসাহিত করা হবে। বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে ধর্মীয় নেতা ও তরূনদের অংশগ্রহনের মাধ্যমে যুব এবং ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে একটি ভাল সংযোগ তৈরী করা হবে। আন্ত:প্রজন্ম সংহতি প্রচারণা আন্ত:সম্প্রদায়ের মাধ্যমে পারস্পারিক শ্রদ্ধা ও সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করা।

আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ধর্মীয় নেতারা সামাজিক সংহতি ও দ্বন্দ নিরসন বিষয়ে কিভাবে ভুমিকা রাখতে পারবে? সমাজে শান্তি-সম্প্রীতি রক্ষায় ও দ্বন্দ নিরসনে যুবদের কি ভুমিকা থাকা দরকার? সকল ধর্মের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে কিভাবে এক প্লাটফর্ম তৈরী করা যেতে পারে? শান্তির বার্তা প্রচারের জন্য ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে কোন মাধ্যম ব্যবহার করতে পারি? সামাজিক শান্তি সম্প্রীতি ও দ্বন্দ নিরসন বিষয়ে যুবদের কিভাবে কাজে লাগানো যায়? উপরোক্ত বিষয়াবলির উপর ধর্মীয় নেতারা সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি ও দ্বন্দ নিরসনের জন্য পরামর্শ প্রদান করেন এবং যুবদের নিয়ে একসাথে কাজ করার প্রত্যায় ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাকিব হোসেন, এছাড়া ও উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প সমন্বয়কারী, মো: তহিদুজ্জামান, তহিদ, একশনএইড বাংলাদেশ এর ইন্সপেরিটর সুমন আচার্য্য, প্রোগ্রাম অফিসার, চন্দ্রশেখর হালদার, ইয়ূথ ফেলো শাওন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *