কালিগঞ্জশ্যামনগরসদর

বিশুদ্ধ পানির দাবিতে সাতক্ষীরার উপকূলে কলস ধর্মঘটে নদীতে খালি কলস ভাসিয়ে দিয়ে প্রতিবাদী পানি দিবস উদযাপন

বিশেষ প্রতিনিধি: ‘হিমবাহ সংরক্ষণ’ ২০২৫ এর এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা পৃথিবীর সাথে সাতক্ষীরার উপকূলের সাধারণ মানুষরা সুশীলনের আয়োজনে পালন করছে বিশ্ব পানি দিবস।

শনিবার (২২ মার্চ) সকালে কালিগঞ্জের কাকশিয়ালী নদী উপকূলে শুরু হয় বিশ্ব পানি দিবসের আয়োজন। কিন্তু কোথায় শান্তি! সর্বত্র লবন পানি যা পান করা যায় না এমন-কি রান্না ও গোসলের কাজেও ব্যাবহার করা যায় না। তাই উপকূলের কলস ধর্মঘটের সমর্থনে শত শত নারী পুরুষ শিশু আজ শনিবার সকালে কাকশিয়ালী নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে খালি কলস।

সমগ্র আয়োজনে সভাপতি সাতক্ষীরার পানি আন্দোলনের নেতা সুশীলন পরিচালক মোস্তফা আক্তারুজ্জামান বলেন, পানির অপর নাম জীবন, জীবন রক্ষায় দরকার পানি। কিন্তু সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে পানির ভীষন অভাব। সেই বিশুদ্ধ পানির দাবিতে উপকূলের নারী-পুরুষ’রা নিরাপদ পানির দাবিতে নদী উপকূলে সড়কে খালি কলস উল্টে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং কলসবন্ধনের পাশাপাশি খালি কলস ভাসানেরা মতো ব্যাতিক্রমী কর্মসূচি পালন করেন তারা।

দিনব্যাপী এই পানি দিবসের আয়োজন করে সুশীলনসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সামাজিক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন। পানি দিবসের প্রতিপাদ্য নিয়ে আলোচনা করেন, পানি দিবসের প্রতিপাদ্য নিয়ে আলোচনা করেন, সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস বাচ্চু, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি’র উপজেলা সভাপতি শেখ আনোয়ার হোসেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহ-সভাপতি এডভোকেট জাফরুল্লাহ ইব্রাহিম ও সৈয়দ মাহমুদুর রহমান, ইউপি সদস্য শেখ খায়রুল আলম, দিপালী সরকার, খাদিজা খাতুন প্রমুখ।

পানি অধিকার আন্দোলনের প্রবীণ নেতা ও দুপ্রক সহ-সভাপতি এডভোকেট জাফরুল্লাহ ইব্রাহিম বলেন, সাতক্ষীরার উপকূলে পানিতে লবনাক্ততার পরিমাণ ২২ পিপিটিরও বেশী যা সহনীয় ক্ষমতার দ্বিগুন। তাই উপকূলের মানুষরা বলছে, ঝড়ঝঞ্ঝা জলোচ্ছাসের মতো দূর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে টিকে আছে কিন্তু পানযোগ্য পানির জন্য উপকূলবাসী সংগ্রাম করতে করতে আজ বড়ই ক্লান্ত।

সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন বলেন, হিমবাহ ধ্বংসের মূল কারন হিসাবে জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করা হয় আর এর জন্য গ্রীন হাউজ গ্যাসই মূল দায়ী। তাই গ্রীন হাউজ গ্যাস কমাতে, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ এবং হিমবাহ সংরক্ষণে সবাইকে সচেতন হতে হবে ও বেশী করে গাছ রোপন সহ রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার, পানির অপচয় রোধ করার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। শুধু মানুষের জন্য না। লোনাপানির সুন্দরবনের বাঘও মিষ্টিপানির আধারে মুখ দিয়ে থাকে। লোনা পানি মোটেও পানযোগ্য নয় তাই মানুষের বাঁচার নিশ্চয়তার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন পানযোগ্য পানি। রান্না গোসলের জন্যও দরকার বিশুদ্ধ পানি। আজ উপকূলের মানুষ তাই বুঝে গেছে বেঁচে থাকার জন্য শুরু হয়ে গেছে পানির লড়াই। আজ সাতক্ষীরার উপকূলে উপকূলে যা দৃশ্যমান হয়ে গেছে। এই সংগ্রামে বিশে^র বিবেকবান সব মানুষকেই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *