কালিগঞ্জ

কালিগঞ্জে চাকুরীর লোভনীয় ফাঁদে ফেলে বেকারদের টাকা নিয়ে লাপাত্তা ‘সীডা’

মাসুদ পারভেজ, কালিগঞ্জ: কালিগঞ্জ উপজেলাতে ভুয়া এনজিওতে চাকরির প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন হতে ৫ শতাধিক বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা সদরের একেবারে নাকের ডগায় বাজার গ্রামের গোলাম ইয়াসিনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে “সীডা” নামে একটি ভুয়া এনজিও সংস্থা ওই বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা বেতন দেওয়ার নামে আবেদন ফি ও জামানাতের নামে জনপ্রতি ২ থেকে ১০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে।

প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার বাজার গ্রামের গোলাম ইয়াসিন এর তিনতলা ভবনের নিচতলায় ফ্লাট ভাড়া নিয়ে নিম্নমানের কয়েকটি চেয়ার টেবিল সাজিয়ে ভুয়া” সিডা” এনজিওর সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। এর আগে গত ২ মার্চ সাতক্ষীরার  দৈনিক পত্রদুত পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ঐ কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সীডা সংস্থার স্যানিটেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আশাশুনি, কালিগঞ্জ, দেবহাটা উপজেলার কর্ম এলাকায় বিভিন্ন পদে কর্মী নিয়োগ করা হবে।

এ জন্য সংস্থার ঠিকানা দেওয়া হয় আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রধান অফিস বুধহাটা ,আশাশুনি, সাতক্ষীরা উল্লেখ করা হয়। এখানে প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর পদে ০১ জন, বেতন আলোচনা সাপেক্ষে। প্রজেক্ট অ্যাকাউন্টেড ৫ জন বেতন আলোচনা সাপেক্ষ, প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার ৩ জন বেতন আলোচনা সাপেক্ষে, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ৫ জন বেতন ২০ হাজার টাকা, ফিল্ড অরগানাইজার ২৫২ জন বেতন ১০ হাজার টাকা, পিয়ন নাইট গার্ড ৫ জন বেতন ৯ হাজার টাকা, রাজমিস্ত্রি ২২৫ জন বেতন চুক্তিভিত্তিক ,স্যানেটারী মিস্ত্রি ৬০ জন এবং রংমিস্ত্রি ৬০ জন চুক্তিভিত্তিক। এই ভাবে চটকদার বিজ্ঞাপন ও বেতনের প্রলোভনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে গত ২ সপ্তাহ আগে অফিস ভাড়া নিয়ে নিয়োগ আবেদনের কার্যক্রম শুরু করে।

এর মধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের প্রায় ৫ শতাধিকের বেশি বেকার যুবক যুবতীরা চাকুরীর আশায় ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা জামানত হিসেবে দিয়ে আবেদন চলমান রেখেছে। ইতিমধ্যে অনেক ইউনিয়নে নিয়োগ দিয়ে কার্যক্রম শুরু করে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় গতকাল থেকে অফিসের লোকজনের আর খোঁজ মেলেনি। গতকাল শনিবার বেলা ১১ টার দিকে ওই অফিসে যেয়ে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। তবে ঐ অফিসের নির্বাহী পরিচালক পরিচয় দানকারী নলতার সোহাগ ০১৯৬০৪৪৬৮৩৫ এবং কো-অর্ডিনেটর পরিচয়দানকারী তারালীর সাইফুল ইসলামের ব্যবহৃত ০১৭৬৮১০০১২৩ মোবাইল ফোনে ফোন দিলেও ফোন ধরেননি। ভুক্তভোগী আবেদনকারী ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের মরিয়ম, জাকারিয়া, রবিউল, চাম্পাফুল ইউনিয়নের শাহরিয়ার তাসকিন দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের হাফিজ ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের আজিজ জাহিদ রতনপুর ইউনিয়নের কামরুন নাহার সহ একাধিক ভুক্তভোগী অনলাইনে আবেদন ফি বাবদ ৩৫০ টাকা এবং অফিস খরচ বাবদ ২০০০ টাকা জমা দেওয়ার কথা স্বীকার করে।এ ছাড়াও তারা আরো জানায় তাদেরকে দিয়ে গত ১ সপ্তাহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রত্যেকের নাম মোবাইল নাম্বার জোগাড় করে দিতে হয়েছে। তবে বর্তমান তাদের আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

এইভাবে উপজেলা জুড়ে উপজেলা সমবায় অফিস থেকে একটি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ, বড় ঋণ মাইক্রোক্রেডি এবং সুদের ব্যবসা দেদারসে চালিয়ে গেলেও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান সবই বৈধ। যে কারণে ব্যাঙের ছাতার মতো উপজেলা জুড়ে গড়ে উঠেছে সমবায় সমিতির নামে সুদের রমরমা বাণিজ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *