স্বামীর সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে এতিম শিশু কন্যাকে নিয়ে বিধবার সংবাদ সম্মেলন
মেহেদী হাসান শিমুল: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিডিএফ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ শাহাদাৎ হোসেন বাবুর সভাপতিত্বে ২২মার্চ শনিবার সকালে
ফয়জুল্যাপুর গ্রামের মৃত এস এম আশরাফউদ্দিনের পুত্র এমএকে হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী সাহিদা আনসারী রুমি দেবরের কবল থেকে মৃত স্বামীর সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে এতিম শিশু কন্যাকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার স্বামী গত ইং ০৪/০২/২০১৯ তারিখে মৃত্যু বরণ করেন। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে আমার একমাত্র দেবর এস এম নাসিরউদ্দিন লিটন গ্রামের মেম্বার সাইদ মোল্যার যোগসাজশে আমার স্বামীর যাবতীয় স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি জোরপূর্বক জবরদখল করে আমাদেরকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে একের পর এক মিথ্যে মামলা দিয়ে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করায় আমার একমাত্র এতিম কন্যাকে নিয়ে অনাহারে ও অর্ধাহারে মানবেতার জীবনযাপন করছি। পৈতৃক সূত্রে আমার স্বামীর প্রাপ্ত সমুদয় সম্পত্তিসহ এম একে হেলালউদ্দিনের ক্রয়কৃত সমূদয় অর্থাৎ প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বিঘা জমিসহ যাবতীয় স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আত্মসাৎ করার পায়তারা করে আসছে। আমার দেবর এসব সম্পত্তি আমাদের না দিয়ে জোরপূর্বক জবরদখল করে রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে ফয়জুল্যাপুর গ্রামের বিভিন্ন লোকজন বারবার সমাধান করার চেষ্টা করেও আমার দেবর নাসিরউদ্দিনের ষড়যন্ত্রে সবকিছু ব্যর্থ হয়ে যায়। ফলে আমি আমার এতিম শিশুকন্যাকে নিয়ে বছরের পর বছর ন্যায় বিচারের আশায় আদালতের বারান্দাসহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিয়ে বেড়াচ্ছি। আমার স্বামী মৃত্যুর আগে অসুস্থ অবস্থায় আমি ও আমার শিশু কন্যাকে গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আবদুল করিম, মোঃ আব্দুল কাদের মোল্লা,সাবেক মেম্বার শফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজনকে দেখে রাখার জন্য বলে যান। সেকারণে আমার স্বামীর মৃত্যুর পর আমার সম্পত্তির ভাগ না দেওয়ায় গ্রামের কয়েকজন লোক প্রতিবাদ করলে আমার দেবর নাসির উদ্দিন গ্রামের এসব লোকজনদের বিরুদ্ধে নানান ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কেউ আমার পক্ষ নিলে আমার দেবর তাদের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। তার অব্যাহত একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির কারণে আমরা আজ দিশেহারা হয়ে পড়েছি। অবশেষে নিরুপায় হয়ে আপনাদের স্বরনাপন্ন হয়েছি।তিনি সবকিছু জেনে শুনে বুঝে তার সমস্যা সমাধানে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপারসহ প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণে সহায়তা করার জন্য দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী এম এ কে হেলালউদ্দিন সাতক্ষীরা জেলার একজন কৃতি সন্তান। সারা জেলার মানুষ তার এক নামে চেনেন এবং জানেন। মৃত্যুর আগে ফয়জুল্লাপুর গ্রামের অসংখ্য লোকজন বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন। তিনি একজন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি যে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি রেখে গেছেন তা সবকিছু সুকৌশলে জবরদখল করার জন্য আমার দেবর নাসিরউদ্দিন বিভিন্ন কূটকৌশলের মাধ্যমে নানান ষড়যন্ত্র করে ভোগদখল করছেন ।
এসব বিষয় নিয়ে ফয়জুল্যাপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার শফিকুল ইসলাম,ফিংড়ীর মাহফুজ মেম্বার,সাবেক পুলিশিং কমিটির সদস্য ও গ্রামীণ শালিশকারক মোঃ আব্দুল কাদের মোল্লা, মাহবুবুর রহমান রনি,অবিনাশ মন্ডল আনারুল ইসলাম গাজীসহ বিভিন্ন লোকজন আমার পক্ষে কথা বলায় আমার দেবর নাসিরউদ্দিন একের পর এক আমিসহ এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করে আসছে। এখন পর্যন্ত আমার দেবর নাসিরউদ্দিন আমাদের নামে জি আর ৯৪৫/২২(সাত), জি আর ৩৬৬/২২(সাত), দেওয়ানী ২৪৪/২৩(সাত) জি আর ২৪৬/২১(সাত), জি আর ৭১/২৫(সাত), পিটিশন ৯০১/২৪(সাত) নম্বরসহ মোট ১৩টি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার কারণে ফয়জুল্যাপুর গ্রামের এসব লোকজন আজ বাড়িছাড়া হয়ে পথে পথে ঘুরছে।আমার স্বামীসহ শ্বশুরের সব সম্পত্তি তার দখলে থাকায় সে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে একের পর এক এসব মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করছে। আমরা আমার স্বামীর যাবতীয় সম্পত্তির অংশ বুঝে পেতে চাইলে সে নানাভাবে আমাদেরকে হয়রানি করছে। ইতিমধ্যে বিজ্ঞ আদালত দেওয়ানী মামলায় আমাদের পক্ষে রায় দিলেও টাকা জোরে আমার দেবর নাসিরউদ্দিন উক্ত মামলা আপিল করে আমাদেরকে জিম্মি করে ফেলেছে। আমরা এখন নিরুপায় হয়ে মানবেতার জীবনযাপন করছি।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমার দেবর নাসিরউদ্দিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সিল স্বাক্ষর জাল করে সে তার পিতার একমাত্র পুত্র সন্তান দাবি করে ওয়ারেশ কায়েম সার্টিফিকেট তৈরি করে স্থানীয় ভূমি অফিসের মাধ্যমে সমুদয় সম্পত্তি তার নামে রেকর্ড করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে উদোর পিন্ডি বুধুর ঘাড়ে দিতে নানান ষড়যন্ত্র করছে। এ ব্যাপারে তিনি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক বিস্তারিত তথ্যসহ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণে সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে একান্ত সহযোগিতা কামনা করেন।