জীবনযাপনসদর

টেন্ডার ছাড়াই সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের পুকুরের মাছ ধরে নিলেন প্রভাবশালী

স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের টেন্ডার ছাড়াই পুকুরের মাছ ধরে নিলেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। গত ২০ জানুয়ারি ভোরে তিনি মাছ ধরে বিক্রি করে দেন। তবে এ বিষয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। বিএনপি নেতা বলেন সরকারি কলেজের এক স্যারের কাছ থেকে শুধুমাত্র মাছ গুলো কিনে নিয়েছেন। আমি শুধুমাত্র কলেজের খাল ও ছোট পুকুরটি ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে লিচ নিয়েছি। হোস্টেল সংলগ্ন বড় পুকুরটি লিচ নেয়নি। মাছ গুলো কিনে নিয়েছি।

স্থানীয় ও এলাকাবাসি সুত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের খাল পুকুর জমি গাছ কোনদিন টেন্ডার হয়নি। নতুন করে টেন্ডার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে গত ৫/১/২৫ তারিখে কলেজের খাল ও ছোট্র একটি পুকুর ওপেন টেন্ডার হয়। সেখানে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারন সম্পাদক মতিনুর রহমান কচি এক বছরের জন্য ৭০ হাজার টাকা দিয়ে লিচ নেন। বাকি গুলো প্রক্রিয়াধীন। কিন্তু সরকারি কলেজের হোস্টেল সংলগ্ন পুকুর টেন্ডার দেওয়া হয়না। সেখানে স্থানীীয় জনগন গোসল ওরছাত্ররা গোসল করে। এবং ও কলেজের পক্ষ থেকে মাছ ছাড়া হয়। কিন্তু গত ২০ তারিখে রাতের অন্ধকারে মতিনুর রহমান কচি মাছ মেরে বিক্রি করে দেন। যা দেখে সবাই হতবাক হয়ে যায়।

এ বিষয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারন সম্পাদক মতিনুর রহমান কচি বলেন, আমি কলেজের খাল ও ছোট পুকুরটি লিচ নিয়েছি। হোস্টেলের পুকুর লিচ নেয়নি। সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক বদরুল মিল্লাতের কাছ থেকে শুধুমাত্র মাছ গুলো ৫০ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছি। আমি উক্ত পুকুর টেন্ডার নেয়নি। কিভাবে উনি মাছ বিক্রি করলেন তার সদুত্তর দিতে পারেননি।

বাংলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক বদরুল মিল্লাতের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি পুকুরের মাছ বিক্রি করার কে। কলেজের অধ্যক্ষ ও ক্রয় ও টেন্ডার কমিটি আছে। আমি কোন মাছ বিক্রি করিনি।

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ক্রয় ও টেন্ডার কমিটির আহবায়ক ও ব্যাবস্থাপন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোন্তাজাবুর রহমান বলেন, কলেজে শুধুমাত্র খাল ও ছোট পুকুরটি টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। হোস্টেল সংলগ্ন পুকুরে কাউকে টেন্ডার ও মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়নি। মাছ ধরেছে ও বিক্রি করেছে এমন কথা বললে তিনি বলেন সেটা কলেজের অধ্যক্ষ বলতে পারবেন আমি জানি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, বিএনপি এখনও ক্ষমতায় আসেনি কিন্তু মতিন রহমান কচির অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তার চাঁদাবাজি জমি দখল টেন্ডার বাজিসহ নানা অপকর্মের কারণে বিএনপির সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে বিএনপির ভোট ব্যাংকে এর প্রভাব পড়বে। তারা কচিকে বিএনপি থেকে বহিষ্কারের দাবি করেন।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল হাসেম জানান, কলেজের খাল ও ছোট পুকুরটি লিচ দেওয়া হয়েছে। হোস্টেলের পুকুরটি লিচ দেওয়া হয়না। তাহলে রাতের অন্ধকারে মাছ ধরা ও বিক্রি করলো কেমন করে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমি মৌখিক ভাবে মাছ ধরার অনুমোদন দিয়েছি। মাছ ধরে কিছু মাছ হোস্টেলে কিছু মাছ বিক্রি করতে বলেছি পরবর্তীতে পুকুরে মাছ ছাড়ার জন্য। কলেজের ক্রয় ও টেন্ডার কমিটি জানেনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বাইরে ছিলাম পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য ৫ই আগস্ট সরকার পতনের পর সাতক্ষীরা কলেজ এলাকার ঋষিপাড়ার কয়েকজন সংখ্যালঘু কে ব্যাপক মারধর এবং কান ধরে উঠবস করান ওই বিএনপি নেতা। আওয়ামী লীগের দোসর বলে তাদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপন নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর বিভিন্ন দপ্তর অভিযোগ করল নেতার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *