জীবনযাপনসদর

সাতক্ষীরায় জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ সাবেক ডিআইজি’র বিরুদ্ধে

স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরার ব্রক্ষ্মরাজপুরে জোরপূর্বক ৫৮ শতক জমি দখল করেছেন ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়নের মৃত নঈমুদ্দিন কারিকরের ছেলে। তিনি ঢাকা রেঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি ছিলেন। চাকুরিতে থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার বলে তিনি এই জমি দখল করেন বলে অভিযোগ করেন জমির মূল মালিক দেবদাস পাল।

জেলা ভূমি অফিস ও রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে ওই জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে এই জমি ডিআইজি শাহাদাত হোসেনের বড়ভাই স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রয় করেন প্রদীপ কাঞ্চন সাহা। এরপর প্রদীপ সাহার কাছ থেকে ওই জমি ক্রয় করেন বর্তমান মালিক দেবদাস পাল। এই সংক্রান্ত একটি কোবালা দলিলে জমির ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের স্বাক্ষর ও মূল্যসহ বিস্তারিত তথ্য রয়েছে(এসএ ৩৬৫৯ নং খতিয়ান খারিজ ৩০০১/১ নং খতিয়ানে ডিপি ১০৬০ নং খতিয়ানে, দাগ নং- ৭০৮২, মৌজা- ধূলিহর)। এছাড়া এই জমি ক্রয় ও বিক্রয়ের প্রমানাদি সহ আসল দলিলে দেবদাস পালের নাম উল্লেখ করা রয়েছে।

জমির মূল মালিক দেবদাস পাল বলেন, ২০১৪ সালে আমি ধূলিহর  ব্রক্ষ্মরাজপুর  এলাকার প্রদীপ কাঞ্চন সাহার কাছ থেকে ৫৮ শতক বিলান জমি কিনি। সেই জমি মিউটেশন(নামপত্তন) করে গত ১০ বছর যাবত ভোগদখল করে আসছিলাম। এরপর ২০২৩ সালের শেষের দিকে ঢাকা রেঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মো: শাহাদাত হোসেন ক্ষমতার বলে জমিটি দখলে নেন। আমরা জমিতে চাষ করতে গেলে মারধর করে জোরপূর্বক আমাদের বের করে দেয় তার লোকজন। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে মৃত্যুর হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন তিনি।

দেবদাস পাল আরও বলেন, ৫৮ শতক ওই জমির কয়েকবছরের খাজনা অগ্রিম পরিশোধ করা রয়েছে। জমির মূল দলিল ও এর স্বপক্ষের কাগজপত্র(স্ট্যাম্প, খতিয়ান, মাঠপর্চা) সবই তার কাছে রয়েছে। গত ১০ বছরেও এই জমি ভোগদখলে কেউ বাধা দেয়নি। তাহলে এখন কেন তারা বাধা দিচ্ছে ? কাগজপত্র অনুযায়ী এই জমি জোরপূর্বক দখল করার অধিকার কারো নেই।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ওই জমিটির দেখভাল করছিলেন মো: দ্বীন আলী নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, গত বছরের শেষ দিকে ডিআইজি শাহাদাত হোসেনের লোকজন তাকে জমি থেকে মারধর করে বের করে দেন। এই জমির আসল মালিক দেবদাস পাল। কোনভাবেই ডিআইজি শাহাদাত এই জমির মালিক হতে পারেন না।

এ ব্যাপারে সাবেক ডিআইজি শাহাদাত হোসেনের ০১৭১১৪৪৫৪২৬ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজী হননি। পরে পুরাতন সাতক্ষীরার ঘোষপাড়ায় তার বাড়িতে যাওয়া হলেও তিনি সাংবাদিকদের সামনে আসতে চাননি। বারবার অনুরোধ করার পর বাড়ির জানালা খুলে ডিআইজি বলেন, ‘ওই সম্পত্তি আমার দাদার। আমি এগুলো রক্ষা করছি। এ ব্যাপারে আদালতে মামলাও করেছি, সুতরাং যা বলার আদালতকে বলবো’।

তবে এখানে তিনি কি মামলা করেছেন সেটাও তিনি জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *