অপরাধসদরসাতক্ষীরা জেলা

টাকা না পেয়ে সাতক্ষীরায় এক এনজিও’র নারী কর্মীর বাড়ি ঘেরাও

স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরায় টাকা ফেরত না পেয়ে এইচএস এডুকেশন এন্ড হেলথ সোসাইটি নামীয় একটি এনজিওর নারী কর্মীর বাড়ী ঘেরাও করেছে ভুক্তভোগীরা। নারী কর্মীর নাম মোছা. হাছিনা।

উক্ত নারী কর্মীর বিরুদ্ধে প্রায় ৬০ জন গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ১১ টার দিকে এনজিওটির নারী কর্মী মোছাঃ হাছিনার বাড়ি ঘেরাও করেন এসব ভুক্তভোগী পরিবার।

জানা যায়, এইচএস এডুকেশন এন্ড হেলথ সোসাইটি নামের একটি এজিওতে ৫ বছর মেয়াদী বিমা বই করেন সাতক্ষীরা সদরের জোড়দিয়া এলাকার প্রায় ৬০ থেকে ৭০ টি পরিবার। তবে ওই এনজিও কর্মী মোছাঃ হাছিনা ৬ বছর পূর্বে টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে গ্রাহকদের কাছ থেকে আসল বই নিয়ে নেয়।

গত অক্টোবর মাসের ৫ তারিখে বেলা ১২ টার দিকে মোছাঃ হাছিনা বাড়িতে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে টাকা ফেরত দিতে পারবে না বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, ভয়ভীতি ও ক্ষয়ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।

এঘটনায় জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার গুলো।

গ্রাহক মোছাঃ আছমা বেগম বলেন, এই মহিলা প্রথমে আমাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছে তোমরা জোন-মজুরি দাও, তোমাদের বাচ্চাকাচ্চা আছে, তোমরা একটা বই কর। গ্রামের মানুষের লোভ দেখিয়ে বইগুলো করিয়েছে। আমার বই করা ছিল তিনটি। দুইটা বইয়ের টাকা কমবেশি দিয়েছে। আরেকটি বইতে ৩০ হাজার টাকা রয়েছে। পরে গ্রামের মেম্বার চেয়ারম্যানদের ধরে শালিস করলে বলেছিল টাকা আমি দেব। আমরা এখানে ওখানে হাঁটাহাঁটি করেছি। পরে ওই মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাদের টাকা দিয়ে নিয়ে যায়। এখন উনি বলতে চাচ্ছে আমি থানায় বসা বসি করে টাকা দিয়ে মিটিয়ে নিয়েছি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে উনি মেটানোর কাগজটা দেখাক আমরা কোন টাকা দাবি করব না।

গ্রাহক সুফিয়া খাতুন বলেন, মেয়াদ শেষ আমাদের কাছ থেকে বই রিসিভ সবকিছু জমা নিয়েছে। যেই একটু কথা বলছি সেই বলছে যাদের প্রমাণ রয়েছে তাদের টাকা দেওয়া হবে। যাদের নেই তাদের দেবনা।

গ্রাহক দাউদ আলী বলেন, এই টাকার জন্য আমি থানা পুলিশসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। লাস্টে আমার নামে গাজার মামলায় নাম উঠায়ে দিচ্ছিল। এজন্য এ বিষয়ে আমি আর তেমন কিছু করিনি। মোড়ের মাথায় বাড়ি, গরিব মানুষ, ভ্যান চালাইয়ে খাই আবার যদি গাজার কেসে ধরে নিয়ে যায় এই বুড়ো বয়সে আবার নির্যাতন ভোগ করতে হবে।

আমাদের গ্রাম থেকে প্রায় ৬০ জন লোকের টাকা নিয়েছে। প্রথমে বলল খুলনা অফিস টাকা না দিলে আমি কি করবো। অফিসে গিয়ে দেখি আমার ১২ হাজার টাকা জমা দেওয়া অথচ হেড অফিসে ২ হাজার টাকা জমা করা। আমার মায়ের ১০০ বছর বয়স। লোকে যাকাত ফিতরা টাকা দিত তাই নিয়ে জমা করে ছিল সে টাকাগুলো আর দিল না।

অভিযুক্ত মোছাঃ হাছিনা বলেন, এটা নকল বই না অফিস থেকে উনারাই তৈরি করেছে। নকল বই আমি কিভাবে তৈরি করব ওখানে তো আমার কোন সই নেই। আমি পাঁচ ছয় জনের বই করিয়েছি। আমি সবার বই একা করাইনি। নুরজাহান নামে আরেকজন কর্মী ছিল। সেও করিয়েছে। নুরজাহান অসুস্থ হয়ে পড়ায় অফিসে আর যেত না। সে কারণে সবাই আমাকে ধরছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *