মেহেদী রং মুছার আগেই নববধুর আত্মহত্যা
সুলতান শাহাজান, শ্যামনগর: বেশ হৈ চৈ আর জাঁকজমকপুর্নভাবে বিয়ে হয়েছিল সতের বছরের কিশোরী সুমাইয়া আক্তার হীরার। বিয়ের দিন স্বামীর সাথে শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পর সাতদিনের ভাত খাওয়ার জন্য আবারও ফিরেছিলেন পিতৃগৃহে।
তবে দ্বিতীয়বার আর স্বামীর ঘরে ফেরা হলো না হাতে মেহেদীর রং লেগে থাকা এ নববধুর। এ নববুধ অভিমান নিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে যেন মুক্তি পেতে চাইলো। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরার ইউনিয়নের চাঁদনীমুখা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে। এঘটনার দুই পরিবারসহ স্থানীয়দের মধ্যে ভর করেছে শোকের ছায়া।
জানা গেছে, গত ৮ অক্টোবর চাঁদনীমুখা গ্রামের জহরুল ইসলাম গাজীর মেয়ে হীরার সাথে একই গ্রামের কোহিনুর গাজীর ছেলে ইস্রাফিল হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের দিন স্বামীর সাথে শ্বশুরালয়ে যাওয়ার পরদিন তারা আবারও ফিরেছিলেন জহরুলের বাড়িতে। তবে পারিবারিক বিষয় নিয়ে সামান্য ভৎর্সনার জেরে শোবার গরের আড়ার সাথে দড়ি ঝুলিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
জহরুল ইসলাম জানান, তার মেয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী তার চিকিৎসা চলছিল। তবে মাঝে কিছুদিন ঔষধ বাদ দেয়ায় হীরা একটু অসংলগ্ন আচারণ করছিল। পুনরায় চিকিৎসকের কাছে নেয়ার আগেই সে এমন দুর্ঘটনা ঘটালো।
নিহেতর স্বামী ইস্রাফিল হোসেন জানান, বিকালে তিনি বাইরের দিকে হাঁটতে যান। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে স্ত্রীর এমন দুর্ঘটনার কথা জানতে পারেন। নিজের বাড়িতে ফিরে স্ত্রীকে নিয়ে পুনরায় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার বিষয়ে শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের সাথে তিনি আলোচনা করেছিলেন।
গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান জি.এম. মাসুদুল আলম জানান, হীরার পিতা জহরুল ইসলামের পরিবারের কয়েকজন মানসিকভাবে অসুস্থ। তার পিতাও একাধিকবার চিকিৎসকের কাছে যেয়ে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ঔষধ সেবন করছে। ইতিমধ্যে সদ্য বিবাহিত মেয়েটা অসুস্থতার জেরে আত্মহত্যা করেছে।
শ্যামনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। দুই পরিবারের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়না তদন্ত ছাড়াই মৃতদেহ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়।