যে ৫ কারণে দাম্পত্যে ‘পিলো টক’ জরুরি
জীবনযাপন ডেস্ক: ‘পিলো টক’ হলো বিছানায় বা শোবার ঘরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথোপকথন বা আলোচনা। সাধারণত এ ধরনের কথোপকথন হয় সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের আগে অথবা পরে। যেখানে দুজনই মন খুলে কথা বলতে পারেন। অনেক সময় স্বামী–স্ত্রী দুজনই সারা দিন ব্যস্ত থাকেন। কর্মজীবী হলে তো আরও বেশি। ফলে দিন শেষে ওই রাতেই ঘুমাতে যাওয়ার সময় খানিকটা ফুরসত মেলে মন খুলে কথা বলার। তাই বিছানায় গা এলাতে না এলাতে ঘুমিয়ে না পড়ে সঙ্গীর সঙ্গে টুকটাক আলোচনাও দাম্পত্যের জন্য খুব ভালো। এমনই পাঁচটি উপকারিতার কথা জেনে নিন এখানে।
মজবুত দাম্পত্য
সাধারণত শারীরিক সম্পর্কের আগে–পরে মানুষ অনেক ফুরফুরে থাকে। এ সময় সঙ্গীর সঙ্গে আলাপ–আলোচনায় নিজেদের মধ্যে জড়তা থাকে না। নিজের মনের সব রকম কথাই সঙ্গীকে বলে ফেলা যায়। একসঙ্গে নিজেদের যাপিত জীবন নিয়ে আরও খোলামেলা আলাপ করা যায় এ সময়। তাই বিছানায় কিছুটা সময় সঙ্গীর সঙ্গে কথা বললে দাম্পত্য আরও মজবুত হয়।
ঘনিষ্ঠতা বাড়ে
বালিশে মাথা দিয়ে কথোপকথন চালালে দুজনের মধ্যে বোঝাপড়ার জায়গাটা আরও পোক্ত হয়, বাড়ে ঘনিষ্ঠতা। ঘুমাতে যাওয়ার আগে বা ঘুম থেকে উঠে বিছানা ছাড়ার আগে সঙ্গীর সঙ্গে যে কথা হয়, তাতে মায়া ও সততা থাকে বেশি। তাই সারা দিন দুজন দুদিকে ছুটে বেড়ালেও দিন শেষে ঘনিষ্ঠতা থাকে একই রকম। শোবার ঘরে সঙ্গীর সঙ্গে এই আড্ডা আরও বেশি ‘লাভ হরমোন’ ও অক্সিটোসিন নিঃসরণ বাড়ায়।
সঙ্গীকে আরও বোঝার সুযোগ
অনেক সময় বছরের পর বছর একই ছাদের নিচে থেকেও সঙ্গীর মনের কথা জানার সুযোগ হয় না। কিন্তু ‘পিলো টক’ এমন একটি বিষয়, যা সেই সুযোগ এনে দেয় দ্রুত। নিয়মিত এই অভ্যাসের চর্চায় সঙ্গী তাঁর খারাপ সময়ে যেমন আপনাকে পাশে পাবেন, ভালো সময়েও আপনার কথাই সবার আগে মনে করবেন। এমনকি কর্মক্ষেত্রেও যখন মানুষ কঠিন চাপের মধ্যে থাকে, রাতে সঙ্গীর সঙ্গে শুয়ে শুয়ে সেই গল্প করলেও ভালো সমাধান আসতে পারে। তাই পরদিন সকালে নাশতার মেনু নিয়ে আলোচনা না করে, শুয়ে শুয়ে বরং অন্যজনকে আরেকটু বোঝার চেষ্টা করা ভালো। এতে দুজনে মিলে একসঙ্গে চলার পথটা দীর্ঘতর হবে।
আস্থা বাড়ায়
সম্পর্ক নাজুক অবস্থায় থাকলে পিলো টক তা কাটাতে সাহায্য করে। অনেক সময় কোনো কথা না বলে, পাশাপাশি বালিশে শুয়ে, একজন আরেকজনের নিশ্বাস পড়ে ফেলা যায়। এ সময় সঙ্গীর সামনে নিজেকে উপস্থাপন করা যায় সবচেয়ে স্বচ্ছভাবে, তাই দাম্পত্যের বন্ধন হয় মজবুত। যেসব দম্পতি বিছানায় নিজেদের মধ্যে বেশি বেশি আলাপ করেন, তাঁদের মধ্যে বিশ্বাসের জায়গা বাড়তে থাকে।
যোগাযোগদক্ষতা বাড়ায়
বালিশে মাথা রেখে কথা বলা মানে দুজনের ছোট ছোট বিষয় উপস্থাপনের সুযোগ পাওয়া। নিজের ভাবনাগুলো আরও সহজভাবে উপস্থাপন করা যায় বিছানায় শুয়ে শুয়ে। এমন অনেক কথা থাকে, যা সব রকম পরিস্থিতিতে বলা যায় না বলে আর বলা হয়ে ওঠে না। কিন্তু আপনি যখন একান্তে নিজেদের মধ্যে থাকবেন, সে সময় যেকোনো কথা সুন্দরভাবে গুছিয়ে সঙ্গীর সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। বিছানা আপনাকে এমন এক সুরক্ষার আবহ দেয়, যেখানে আপনি ঠিক–বেঠিক বিবেচনা না করেই সবকিছু আলোচনা করতে পারবেন। আর এভাবেই নিজের যোগাযোগদক্ষতাকে নতুন একটি মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে প্রতিদিনের এই ছোট্ট অভ্যাস।