শীর্ষ চোরাবারবারী আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা শিশুকে জিম্মি করার অভিযোগ
সুলতান শাহাজান, শ্যামনগর: সুন্দরবনের ত্রাস সীমান্তের দুর্ধর্ষ্য চোরাকারবারী আব্দুল্লাহ তরফদারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা পরিবারের এক শিশুকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
অবৈধ পথে ভারতে পার করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কৌশলে ঐ শিশুকে নিয়ে আব্দুল্লাহ আত্মগোপন করেছে বলে অভিযোগ।
এঘটনার সাথে আব্দুল্লাহর ভাই আরিফ বিল্লাহ জড়িত থাকা সত্বেও এখন সে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করছে। এমতাবস্থায় মাত্র ছয় মাস বয়সী শিশুকে হারিয়ে রোহিঙ্গা পরিবারটি নিদারুন অসহায়ত্বের মধ্যে পড়েছে।
আত্মসমর্পণকৃত বনদস্যু আব্দুল্লাহ শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামের আকবর আলী তরফদারের ছেলে। প্রায় তিন মাস আগে দুই রোহিঙ্গা নারীকে অবৈধভাবে ভারতে পাচারের সময় বিজিবির হাতে আটক হয়ে কারাগারে যায়। পরবর্তীতে ৫ আগষ্ট সাতক্ষীরা জেলা কারাগার ভেঙে পালানোর পর থেকে সে আত্মগোপনে চলে যায়।
জানা যায়, ৫ আগষ্ট সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে পালানোর পর আব্দুল্লাহ তার চাচা আব্দুল গফফার তরফদারের আশ্রয়ে ছিল। একপর্যায়ে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে কক্সবাজারের চকোরিয়া যেয়ে ভারতে পার করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েকজন নারী-পুরুষের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়।
তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর কৈখালী সীমান্ত দিয়ে তিন নারীকে ভারতে পার করে দিলেও ঝড়ের কারনে নিরাপত্তার কথা বলে তাদের সাথে থাকা ছয় মাসের শিশুকে আব্দুল্লাহ নিজের কাছে রেখে দেন। তবে পুর্বপ্রতিশ্রুতি মেনে পরের দিন কোলের শিশুকে ওপারে অপেক্ষরত মায়ের কাছে না দিয়ে টালবাহানা শুরু করে আব্দুল্লাহ। একপর্যায়ে নিজের ব্যবহৃত মুটোফোন বন্ধ করে দিয়ে ঐ শিশুর পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় সে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আজগার হোসেন বুলু জানান, বুধবার দুই রোহিঙ্গা পুরুষ তার কাছে এসে আব্দুল্লাহর খোঁজখবর নিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা ছয় মাসের শিশুকে আব্দুল্লাহর জিম্মি করার ঘটনা প্রকাশ করে।
এদিকে স্থানীয় একাধিক সুত্র নিশ্চিত করে জানিয়েছে দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল্লাহ, তার চাচা আব্দুল গফফার ও ভাই আরিফ বিল্লাহের নেতৃত্বে একটি চক্র অবৈধ পথে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুসহ পুরুষদের ভারতে পাচারের কাজ করছে।
একাধিকবার আটক হয়ে কারাবরণ করা সত্ত্বেও চক্রটি কোনভাবেই এমন অপকর্ম থেকে পিছু হটছে না। মাথাপিছু ১২/১৪ হাজার টাকার চুক্তিতে তারা রোহিঙ্গাদের ওপারে পার করার কাজ করে থাকে। এমনকি নিজেদের নিযুক্ত দালালদের মাধ্যমে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা নারীদের তারা ভাগিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন সীমান্ত এলাকায় নিয়ে আসে বলেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও আব্দুল্লাহর দু;টি নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। তবে আব্দুল্লাহর ভাই নিজের ভাইয়েল অপকর্মের সাথে জড়িত না- বলে দাবি করেন।