অপরাধখুলনাজাতীয়ডুমুরিয়াপাটকেলঘাটারাজনীতিলিডসদরসাতক্ষীরা জেলা

সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়ক: শতকোটির সড়ক বেহাল, শাস্তি দাবি ঠিকাদারের

স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়ক খুলনা বিভাগের ব্যস্ততম একটি সড়ক। মহাসড়কের সাতক্ষীরা-চুকনগর অংশের ৩০ কিলোমিটার নির্মাণে খরচ হয়েছে ১০৯ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০২১ সালের মার্চে। এরই মধ্যে পিচ উঠে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। এতে মহাসড়কে অহরহ ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বেহাল সড়কে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রাংশ।

এই সড়কের কাজ করেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাগেরহাটের মেসার্স মোজাহার এন্টারপ্রাইজ। চলতি বছরের গত মার্চে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতার সময়কাল তিন বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এই মেয়াদ শেষ হতে না হতেই সড়ক আবার বেহাল হয়ে পড়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে সড়ক বেহাল হয়ে পড়ায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দুষছেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি, নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের বেশ কিছু এলাকায় রাস্তা দেবে গেছে। এতে বেড়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। বাসচালক আজিজুল ইসলাম বলেন, এই তো সেদিন করল এই মহাসড়ক। কিন্তু কদিন যেতে না যেতেই রাস্তার এমন অবস্থা, গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে গেছে। কিছু জায়গায় রাস্তা দেবে গর্ত হয়ে গেছে। পাশেই আবার উঁচু হয়ে গেছে। এভাবে বাস চালানো যায় না।

পাটকেলঘাটা এলাকার বাসিন্দা আলামিন জানান, এই রাস্তার বেহাল দশা। রাস্তায় গর্ত হয়ে যাওয়ার কারণে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।একই এলাকার আলিমুর রহমান জানান, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও শিডিউল অনুযায়ী কাজ না করার কারণে রাস্তার এই অবস্থা। তদন্ত করে ঠিকাদারের দুর্নীতির শাস্তির দাবি জানান তিনি।

জানা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বড় বড় প্রকল্পের ঠিকাদারি করত বাগেরহাটের মেসার্স মোজাহার এন্টারপ্রাইজ। কথিত আছে, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালকে শতকরা ২০ ভাগ কমিশন দিতে হতো ঠিকাদারকে।

ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব আলী নূর খান বাবুল বলেন, এ কাজটা করেছে মোজাহার এন্টারপ্রাইজ। তিন বছর তো দূরের কথা, নির্মাণের ছয় মাসের মধ্যে রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার আমলে শেখ হেলাল বা মোজাহারের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস কারও হয়নি।

নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজের সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি।

তবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের দাবি, মহাসড়কের কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি। মহাসড়কের দুই পাশে পানি থাকায় তাড়াতাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজ বলেন, এই মহাসড়কে পাথরবোঝাই ভারী ট্রাক চালানো হয়। এতে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া সড়কের দুই পাশে থাকা পানি ও ঘের রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার একটি বড় কারণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *