অনলাইনজাতীয়

বন্যার পানি কমলেও কমেনি দুর্ভোগ

ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের নদ-নদীতে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি মানুষের। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন বানভাসিরা। বাড়িঘরের কিছুই নেই আগের মতো। সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে ভয়াবহ বন্যা। এখন শুধুই বেঁচে থাকার সংগ্রাম।

এদিকে রাজশাহীতে কমছে পদ্মার পানি। তবে এবার ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুললেও পানি বাড়েনি পদ্মায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা ও মহানন্দার পানি স্থিতিশীল থাকলেও দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। মৌলভীবাজারে বন্যার উন্নতি হয়েছে সেইসঙ্গে নিম্নাঞ্চল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। ফেনীর সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির দিকে রয়েছে। সেনবাগে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে, দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষতির চিহ্ন।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম, সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এদিকে, বন্যায় দেশের বিভিন্ন জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪-এ। মৃতদের মধ্যে ৪১ জন পুরুষ, ৬ জন মহিলা ও ৭ জন শিশু।

এছাড়া দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মনু নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অন্যান্য প্রধান নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে।

আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে এ সময় এ অঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, ফেনী, মুহুরি, গোমতী, তিতাস ইত্যাদি নদীর পানি হ্রাস পেতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার।

রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি ফের কমতে শুরু করেছে। টানা তিন দিন পর গত বৃহস্পতিবার পদ্মার পানি ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে হয়েছিল ১৬ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার। সর্বশেষ শুক্রবার সেই ৪ সেন্টিমিটার কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটারে।

এদিন বিকেল ৩টায় রাজশাহী শহরের বড়কুঠি পয়েন্টে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। ফলে এক দিনের ব্যবধানে পদ্মার পানি কমেছে ৪ সেন্টিমিটার। এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় সর্বশেষ পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার।

জানা গেছে, ভারতের মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলার গঙ্গা নদীতে অবস্থিত ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। তার মধ্যে রাজশাহী জেলাও রয়েছে। গত ২৬ আগস্ট ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়ায় নদীর চরাঞ্চল ছাড়াও নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে পদ্মার চরে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই বসতবাড়ি ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসেন।

তবে এবার ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুললেও পানি বাড়েনি পদ্মায়। ২৬ আগস্ট থেকে একটানা তিন দিন পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। বুধবার দিবাগত রাত থেকে বাড়তে শুরু করে পদ্মার পানি। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় শহরের বড়কুঠি পয়েন্টে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ একরাতে বেড়েছিল ২ সেন্টিমিটার।

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, সোমবার বিকেল ৩টায় পদ্মা নদীর রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকেও ছিল একই উচ্চতা। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত একই উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অঞ্চলটিতে পানির বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। ফলে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ৭৫ মিটার নিচে আছে। রাজশাহী পাউবোর পানির উচ্চতা পরিমাপকারী এনামুল হক বলেন, পদ্মার পানি কখনো কমছে আবার কখনো বাড়ছে। নির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পানি বাড়বে কিনা। বৃহস্পতিবার রাত থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার সকাল ৬টায় ছিল ১৬ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া বেলা ১২টা ও বিকেল ৩টায় ছিল ১৬ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
পদ্মা ও মহানন্দা নদীতে পানি স্থিতিশীল রয়েছে। এতে জেলায় বন্যার আশংকা না থাকলেও সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার দুটি ইউনিয়নে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন আতংকে নদী তীরবর্তী মানুষজন তাদের বাড়ি-ঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা ও মহানন্দা নদীতে পানি বাড়েনি। পদ্মা নদীর পানির বিপদসীমার দেড় মিটার এবং মহানন্দা নদীর পানির বিপদসীমার প্রায় দুই মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে পদ্মা নদীতে পানির স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্মার তীরবর্তী কিছু কিছু এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। পানির স্রোতের কারণে এখন নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের বোগলাউড়ি ও সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। ইতিমধ্যে ভাঙনে কিছু বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে ভাঙ্গন আতংকে নদীতীরবর্তী মানুষজন তাদের বাড়ি-ঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দিন ভাঙনের কথা স্বীকার করেছেন।

জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান জানান, যদি জেলায় বন্যা দেখা দেয় তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে এবং সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক নজরদারি করছেন। এছাড়া জেলার প্রায় ১২শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র চালুর করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

মৌলভীবাজার:
উজানে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌলভীবাজারে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এখন আশ্রয় কেন্দ্রে ওঠা মানুষদের বাড়ি ফেরার অপেক্ষায়। বন্যার পানির তোরে অনেক স্থানে বাড়িঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন বন্যার পানির নিচে বাড়িঘর তলিয়ে থাকায় সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে আউশ, আমন ধান, ও সবজি ক্ষেতসহ সড়কের। এখন প্রয়োজন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকয় পুনর্বাসন।

প্রতিদিন জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, কোস্ট নগার্ড ও বিজিবির ত্রাণ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনসহ ব্যক্তি উদ্যেগে ত্রাণসামগ্রী বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। তবে অধিকাংশ ত্রাণ আশ্রয়কেন্দ্রে দেওয়া হচ্ছে। দূর্গম বা নিম্নাঞ্চলে ত্রাণসামগ্রী প্রয়োজনের তোলনায় কম পৌঁছাচ্ছে। বন্যাদুর্গত নিম্নাঞ্চলে খাদ্যসংকট ও বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে।

ফেনী:
সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির দিকে। বানের পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে সড়ক, বসত বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন ভেসে উঠতে শুরু করেছে। বানের পানিতে বসতঘর ভেসে যাওয়ায় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারিয়ে ফেলেছেন অনেকে। বিশেষ করে কাঁচাঘরের বাসিন্দাদের দুর্গতি চরমে। এ পর্যন্ত বন্যায় ফেনী জেলায় মোট ২৩ জন মারা গেছে। জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকে ২৩ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

তালিকায় উপজেলা হিসাবে ফেনী সদরে তিনজন, ছাগলনাইয়ায় তিনজন, পরশুরামে দুই জন, ফুলগাজীতে ৭ জন, সোনাগাজী ৬ জন, দাগনভুইয়ায় দুইজন মারা গেছে। বানের পানি ঊঁচু জায়গা থেকে নেমে গেলেও নিম্নাঞ্চলের পানি স্থিত অবস্থায় আছে। গ্রামাঞ্চলের সড়ক ভেঙে যাওয়ায় জনগণের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। দাগনভুইয়া ও সোনাগাজীর বন্যা পরিস্থিতির উল্লেখ্যযোগ্য উন্নতি হয়নি। বানের পানি নামার পর মানুষের মাঝে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন মেডিক্যাল টিম বন্যাকবলিত এলাকায় চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। ত্রাণ কাজে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, ফায়ার ব্রিগেডসহ শতাধিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করছে।

নোয়াখালী:
সেনবাগে নতুন করে না বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এতে সেনবাগ পৌরসভাসহ মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এতে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেওয়া মানুষ বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলে নবীপুর, বীজবাগ, মোহাম্মদপুর, কাবিলাপুর ও উত্তরাঞ্চলে অজুনতলা, ডমুরুয়া,ডমুরুয়া, কেশারপাড় ও ছাতারপাইয়ার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ওই এলাকার বাড়িরঘর ডুবে থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে রয়েছে বন্যাদুর্গতরা। এখানো প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ত্রাণ না পৌঁছায় এতে করে গ্রামের মানুষরা চরম খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছে। পানি নামতে শুরু হওয়া সড়কগুলো ক্ষত চিহ্ন ফুটে উঠতে শুরু করেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জিসান বিন মাজেদা জানান, সেনবাগে সরকারিভাবে ১৭৮টি ও বেসরকারিভাবে ৫৫টি আশ্রায়কেন্দ্রে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার বন্যার্ত আশ্রয় নিয়ে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২১৫ মেট্রিকটন চাউল ও১৪০ মেট্রিকটন শুকনো খাবার বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর:
শুক্রবার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও পানি নামছে ধীরগতিতে। তবে এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে ধীরগতিতে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উদ-জামান।

তিনি বলেন, মেঘনার পানি বিপদসীমার অনেক দুই মিটারের বেশি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নোয়াখালী, ফেনী, কচুয়া এবং চাঁদপুর থেকে নেমে আসা পানি লক্ষ্মীপুরে ডাকাতিয়া ভুলুয়ানদী হয়ে ধেয়ে আসছে। এ পানিগুলো লক্ষ্মীপুর থেকে ওয়াপদাখাল, রহমতখালী খালসহ অন্যান্য কয়েকটি খালে এসে রহমতখালী ও হাজিমারা রেগুলেটার হয়ে মেঘনা হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। এতে পানি নামার চেয়ে উজান থেকে আসা পানির চাপ অনেক বেশি। ফলে আশাতীত পানি মেঘনায় নামতে পারছে না।

সরকারি হিসেব মতে সাত লাখ ২০ মানুষ পানিবন্দি বলা হলেও বেসরকারি মতে এ সংখ্যা ১২ লাখেরও বেশি। এখনো ২৬৫টি গ্রাম এবং চারটি পৌরসভার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এক লাখ ৮০ হাজার। তবে এ পর্যন্ত ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে সরকারিভাবে নগদ বিশ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ৭৮৯ মে.টন চাল এবং ২৯ হাজার ৬৯৩ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বন্যার কারণে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা চার। বন্যা স্থায়ী হওয়ার ফলে প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগী ও নিউমোনিয়া এবং ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *