অপরাধআইন আদালতজাতীয়

তিন দফায় অন্তত ১৫ জন মিলে পেটান তোফাজ্জলকে

ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথিকক্ষে তোফাজ্জল হোসেনকে (৩২) পিটিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার ছয় শিক্ষার্থী। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন শুক্রবার বিকেল থেকে এই ছয় শিক্ষার্থীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে রাত ৯ টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্টসূত্র বলছে, তিন ধাপে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে মারধরে অংশ নেন। জবানবন্দিতে ওই ছয় শিক্ষার্থী তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবার নাম প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, চোর সন্দেহে তিন দফায় তোফাজ্জলকে মারধর করা হয়।

আদালতে জবানবন্দি দেওয়া ছয় শিক্ষার্থী হলেন—ঢাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. মোত্তাকিন সাকিন এবং আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম নামের তিন শিক্ষার্থী। তারা সবাই ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র। তাদের মধ্যে জালাল মিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে তিনি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগে করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন। বাকিদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ছয় শিক্ষার্থীর সবাই বলেছেন, ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছাত্রদের ছয়টি মুঠোফোন ও মানিব্যাগ চুরি হয়েছিল। তোফাজ্জল সেদিন রাত আটটার দিকে হলের ফটক দিয়ে মাঠের ভেতরে যান। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী চোর সন্দেহে তাকে আটক করে হলের অতিথিকক্ষে নিয়ে যান। পরে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে স্টাম্প দিয়ে মারধর করা হয়। এরপর তাকে হলের ক্যানটিনে নিয়ে রাতের খাবার খাওয়ানো হয়। খাওয়া শেষে আবার তাকে হলের অতিথিকক্ষে এনে ব্যাপক মারধর করেন একদল শিক্ষার্থী। রাত ১২টার দিকে হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তারা জানতে পারেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তোফাজ্জল মারা গেছেন।

এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে ওই ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *