সাতক্ষীরায় ‘ভূমি অফিসের সেবাঃ সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ বিষয়ক গণশুনানি ও মতবিনিময় সভা
স্টাফ রিপোর্টার: ‘‘ভূমি সেবার সার্বিক মানোন্নয়নে প্রয়োজন সেবা গ্রহীতাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ’’- এ স্লোগানকে ধারণ করে সাতক্ষীরা সদরের মাছখোলা নতুন বাজার (শিবতলা) এলাকায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), সাতক্ষীরার যৌথ উদ্যোগে গণশুনানি ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় সনাকের ভূমি বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক হেনরী সরদারের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বদরুদ্দোজা। বিশেষ অতিথি ছিলেন ধুলিহর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব মোস্তফা মনিরুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ভূমি অফিসের এসিজি এস. এম. বিপ্লব হোসেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শিবতলা (মাছখোলা) এলাকার মেম্বার মিজানুর রহমান।
এছাড়া বক্তব্য দেন সনাকের ভূমি বিষয়ক উপকমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. দিলারা বেগম, সহ-সভাপতি ইয়াছীন ছিদ্দীকী, ভারতেশ্বরী বিশ্বাস এবং মরিরুজ্জামান মুন্না। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টিআইবি’র এরিয়া কো-অর্ডিনেটর (সিই) আল-আমিন।
সভায় সনাকের এসিজি, ইয়েস সদস্যসহ দেড় শতাধিক সচেতন নাগরিক অংশগ্রহণ করেন। প্রশ্নোত্তর পর্বে সেবাগ্রহীতাদের পক্ষ থেকে ভূমি সেবা গ্রহণের নানা সমস্যার কথা উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ছিল- সেবা পেতে দীর্ঘসূত্রিতা, কার্যকর হেল্প ডেস্কের অভাব, দালালদের প্রতারণা, সেবা গ্রহণে অতিরিক্ত সময় লাগা, খাজনা জমার সময় ভুল খতিয়ান নেওয়ার অভিযোগ, ভূমিহীনদের বরাদ্দকৃত জমির কাগজ পেতে জটিলতা। সেবা পেতে দীর্ঘসূত্রিতা, কার্যকর হেল্প ডেস্ক না থাকা, দালাল কতৃক প্রতারিত হওয়া, সেবা পেতে সময় বেশি লাগা, খাজনা গ্রহণের সময় ভুূল খতিয়ানে জমা করা, ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্ধকৃত জমির দলিল পাওয়ার জন্য বারবার এসেও না পাওয়া ইত্যাদি। সহকারী কমিশনার (ভূমি), মোঃ বদরুদ্দোজা সেবাগ্রহীতাদের প্রশ্নগুলোর জবাব প্রদান করেন এবং প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান সমস্যাসমূহ সমাধানের গৃহীত পরিকল্পনাসহ ও পদক্ষেপ ও অগ্রগতি তুলে ধরেন।
এ সময় তিনি বলেন- গণশুনানিতে আজ নাগরিকদের প্রত্যাশা ও দাবি যে শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে, তা আগামী দিনের ভূমি সেবা আরও সহজ ও জনবান্ধব করতে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভূমি সেবার জটিলতা কমাতে আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। দালালমুক্ত, দ্রুত ও স্বচ্ছ ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
সভাপতির বক্তব্যে হেনরী সরদার বলেন, ভূমি সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নাগরিক-প্রশাসন সমন্বয় এখন সময়ের দাবি। প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে সুশাসন বাস্তবায়ন সম্ভব।
অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তর পর্বে উপস্থিত দেড় শতাধিক সচেতন নাগরিক ও সেবাগ্রহীতার মধ্য থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মোঃ আব্দুর রশিদ, লুতফর রহমান, আনারুল ইসলাম, লতা, কেসমত আলী, সাজাহান, মোঃ মেহেদী হাসান প্রমূখ।
গণশুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভূমি সেবার বিদ্যমান সমস্যা দূরীকরণ, জবাবদিহিতা বৃদ্ধি ও জনবান্ধব সেবা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। নিয়মিত মতবিনিময়ের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া আরও বেগবান হবে বলেও মত দেন বক্তারা।

