সাতক্ষীরায় এক সপ্তাহে ৬২ লাখ টাকার মালামাল ও বিপুল মাদক জব্দ; সীমান্ত নিরাপত্তায় মতবিনিময় সভা
স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরা ও কলারোয়া সীমান্তে টানা বিশেষ চোরাচালান ও মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ৬২ লাখ টাকার ভারতীয় মালামাল এবং বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়ন (৩৩ বিজিবি)। একই সময়ে সীমান্তে অপরাধ প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন বিওপি এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে একাধিক মতবিনিময় সভা।
গত ০৭–১৩ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত ৩৩ বিজিবির আওতাধীন পদ্মশাখরা, ভোমরা, গাজীপুর, ঘোনা, বৈকারী, কালিয়ানী, কুশখালী, তলুইগাছা, কাকডাঙ্গা, মাদরা, হিজলদী, সুলতানপুর, চান্দুরিয়া বিওপি এবং বাকাল–ঝাউডাঙ্গা চেকপোস্ট এলাকায় পৃথক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এসব অভিযানে মোট ৬২ লাখ টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- ৫৭,৪০,০০০ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ভারতীয় ঔষধ, ১,৮২,৫০০ টাকা মূল্যের ভারতীয় শাড়ি, ২,২৯,৯০০ টাকা মূল্যের অন্যান্য চোরাচালানী পণ্য।
বিজিবির ভাষ্য অনুযায়ী, চোরাকারবারীরা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে এসব পণ্য বাংলাদেশে এনে দেশের বৈধ শিল্প ও রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত করছিল। জব্দকৃত সমস্ত পণ্য নিয়মিত আইনি প্রক্রিয়া শেষে সাতক্ষীরা কাস্টমসে জমা দেওয়া হয়েছে।
একই সময়ে ৩৩ বিজিবির বিভিন্ন বিওপির টহলদল বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় উদ্ধার করা হয়- ২০৪ বোতল ভারতীয় মদ, ২০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য সাতক্ষীরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে জমা করা হয়েছে, যা পরবর্তীতে জনসম্মুখে ধ্বংস করা হবে।
স্থানীয় জনগণ বিজিবির মাদকবিরোধী কঠোর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে সাতক্ষীরা ব্যাটেলিয়ন (৩৩ বিজিবি) সীমান্তবর্তী জনগণকে চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করতে ০৭–১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ভোমরা, গাজীপুর, বৈকারী, তলুইগাছা, কাকডাঙ্গা, মাদরা, হিজলদী, সুলতানপুর, চান্দুরিয়া বিওপি এবং ঝাউডাঙ্গা বিশেষ ক্যাম্প এলাকায় বিজিবির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় মতবিনিময় ও জনসচেতনতামূলক সভা।
সভায় স্থানীয় মসজিদের ইমাম, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ ৪০০–৫00 জন অংশ নেন।
বক্তারা সীমান্ত নিরাপত্তা বজায় রাখতে বিজিবিকে তথ্য সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান এবং কোন ব্যক্তি যেন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হয়।
৩৩ বিজিবি জানায়, দেশের রাজস্ব ফাঁকি রোধ, দেশীয় শিল্প সুরক্ষা, সীমান্ত অপরাধ দমন এবং তরুণ সমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করতে তাদের এ ধরনের অভিযান আগামীতেও আরও কঠোরভাবে অব্যাহত থাকবে।

