কালিগঞ্জে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, ভাঙচুর ও স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ
মাসুদ পারভেজ, কালিগঞ্জ: কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব মৌতলা (হাকিমপাড়া) এলাকায় স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন,ভাঙচুর, স্বর্ণালংকার লুট ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী আনছার আলী খানের মেয়ে মনোয়ারা বেগম নিজে সোমবার (৩ নভেম্বর) থানায় হাজির হয়ে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, মনোয়ারা বেগমের স্বামী হাফিজুর রহমান (যিনি একাধিক বিয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত) এবং তার পরিবারের সদস্যরা নাছিমা খাতুন, হালিমা খাতুন, হাজিরন বেগম, ছফুরা বেগম ও শেখ আব্দুল হামিদসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন মিলে দীর্ঘদিন ধরে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন।
মনোয়ারা বেগম জানান, ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিয়ের পর থেকেই স্বামী হাফিজুর রহমান প্রায়ই তুচ্ছ ঘটনায় তাকে মারধর ও অপমান করতেন।নির্যাতনের কারণে একাধিকবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তার অভিযোগ, স্বামী হাফিজুর রহমান অন্য এক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং পরে তাকে তালাক দেন। এরপর থেকে তিনি দুই কন্যা- হাফিজা (যিনি বাকপ্রতিবন্ধী) ও সুমাইয়াকে নিয়ে চরম কষ্টে দিনযাপন করছেন।
সম্প্রতি, গত রবিবার(২ নভেম্বর) গভীর রাতে অভিযুক্তরা বেআইনি জনতাবদ্ধে তার বসতবাড়িতে প্রবেশ করে অশালীন ভাষায় গালাগাল করে এবং বাধা দিতে গেলে ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। এ সময় তারা স্টিলের শোকেজ ভেঙে ৪ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের আংটি ও ৮ আনা ওজনের একটি চেইনসহ মোট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে যায়।
মনোয়ারা বেগম অভিযোগ করেন, অভিযুক্তরা তাকে ও তার প্রতিবন্ধী কন্যাকে হত্যার হুমকি দেয়ায় তারা প্রাণভয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, যেকোনো সময় অভিযুক্তরা আবারও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে।অভিযুক্ত নাছিমা খাতুন, হালিমা খাতুন,হাজিরন বেগম ও ছফুরা বেগমের সঙ্গে সরেজমিনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা ঘটনার বিষয়ে কিছু না জানিয়ে এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগটি আমরা পেয়েছি তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

