অনলাইনঅপরাধখুলনাসারাবাংলা

রূপসায় ভাই বোনের অত্যাচার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

নাজমুল আলম মুন্না: রূপসায় ভাই ও বোনের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক যুবক। ৩১ অক্টোবর রূপসা রিপোর্টার্স ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে রূপসা উপজেলার রামনগর গ্রামের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ জানান, ২০১১ সালে সে বিবাহ করে স্ত্রীকে বাড়িতে আনলে বড় বোন ফাতেমা আর ভাই খালিদ সাইফুল্লাহ সেই বিয়েটা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি। ভাই ও বোনের বিভিন্ন কু-পরামর্শে তার মা এবং অন্য বোনদের সহযোগিতাই তার বিরুদ্ধে উসকে দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হয়ে ভাড়াবাড়িতে বাড়িতে বসবাস করে। মাসুম বিল্লাহ বাড়িতে না থাকার সুযোগে তার পিতা শামসুল হক এর কাছ থেকে তার ভাই খালিদ সাইফুল্লাহ কৌশলে তার জমানো আট লক্ষ টাকা নিয়ে নেয়। পিতার সারা জীবনের কষ্টের অর্জিত টাকার শোক সহ্য করতে না পেরে মানুষিক ভারসাম্যহীন হয়ে মারা যায়। এরপর পরিকল্পনা মাফিক তার মেঝ বোনের জামাই কামাল মল্লিককে সাথে নিয়ে পিতার গ্রামের সকল জমি বিক্রয় করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় সাইফুল্লাহ। এতে ও খান্ত না হয়ে তার মায়ের সম্পত্তি মামা রুহুল আমিন কে সাথে নিয়ে মাদ্রাসায় চাকরি দিয়ে সকল জমি বিক্রয় করে সকল ভাই বোনকে ঠকিয়ে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।

এ সময় তিনি আরো জানান, সাইফুল্লাহ মাকে নিয়ে থাকবে বলে বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে মাকে নিয়ে যায়। সেখানে মায়ের নামে সমস্ত জমি নিজের নামে লিখে নেওয়ার পরিকল্পনা করার সময় তার মা তাকে সংবাদ পাঠালে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় মাকে বাড়িতে নিয়ে আসলে তার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে গ্রামের মানুষের হস্তক্ষেপে তার মা সকল ভাই-বোনদেরকে আইন অনুযায়ী জমি লিখে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। সাইফুল্লাহ তখন থেকে বড় বোনকে দাবার গুটি বানিয়ে মাকে ঢাল হিসেবে সামনে রাখে এখনো পর্যন্ত প্রশাসনিকভাবে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। খালিদ সাইফুল্লাহ বড় বোন এবং তার স্ত্রী লিজাকে দিয়ে তার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে বিভিন্ন সময়। বলতে থাকে মাসুমের সংসার থেকে চলে না গেলে তোকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেব। এরকম আঘাত ও নির্যাতন দীর্ঘদিন ধরে মাসুম ও তার স্ত্রীর উপর চলে আসতেছে। তার স্ত্রী নির্যাতন সইতে না পেরে বাবার বাড়িতে চলে যায়।

জুন মাসের ১৫ তারিখ, সাইফুল্লাহ গং মাসুম এর স্ত্রী কে মারপিট করে পুলিশকে ফোন দিয়ে বলে তার স্ত্রী নাকি তাদেরকে মারপিট করেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এরপরে ১৯ জুন পুনরায় আবার মাসুম এর স্ত্রীকে মারপিট করায় তাকে খুলনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার পর তাদের নামে একটা অভিযোগ থানায় দায়ের করা হয়। ভাই বোনদের অত্যাচারে এমন কি চলাচলের রাস্তা আটকে দেয় বলে সংবাদ সম্মেলনে যুবক জানান। মাসুমকে ও তার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করার জন্য তার স্ত্রীকে লক্ষ করে সাইফুল্লা ইট মেরে দেয় । ইটটি শরীরে না লেগে রান্না ঘরের ভিতর বিভিন্ন মালামাল ভেঙ্গে যায়। সাইফুল্লাহ দরজায় লাথি মেরে দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে ঢুকে ঘরের সব মালামাল লুটপাট ভাঙচুর করে এবং তার স্ত্রী ব্যবহৃত মোবাইল ফোন,গলার চেইন, কানের টপস ও মূল্যবান কাগজপত্র কিছু গচ্ছিত নগদ অর্থ নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীর স্ত্রী বাধা দিলে দুই বোন, খালিদ সাইফুল্লা,তার স্ত্রী লিজা এবং বড় বোনাই কামাল তার স্ত্রীকে বেদম মারপিট করে। তার স্ত্রী চিৎকারে আশেপাশে লোকজন এগিয়ে এলে তাদের নিকট থেকে স্ত্রীকে উদ্ধার করে রুপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান হওয়ার কথা থাকলেও তা আজও হয়নি। উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।

ভুক্তভোগী জানান, তার পরিবারের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে তার ভাই, বোন ও আত্মীয়-স্বজনেরা। উক্ত বিষয়টি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী মাসুম বিল্লাহ ও তার পরিবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *