টাকার অভাবে ভর্তি ও লেখাপড়া অনিশ্চিত রত্নার
স্টাফ রিপোর্টার: দারিদ্র্য, মায়ের অসুস্থতা আর অদম্য ইচ্ছাশক্তির মাঝেও উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন আঁকড়ে আছে সাতক্ষীরার মেধাবী ছাত্রী রত্মা। সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও টাকার অভাবে থমকে আছে তার পথচলা। মানবিক সহায়তার হাত বাড়ালে হয়তো তার স্বপ্ন বাঁচতে পারে- সে হতে পারে সমাজের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
সাতক্ষীরার দ্যা পোল স্টার পৌর হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও ছফুরন্নেসা মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর অনার্স ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে রত্মা রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। কিন্তু আর্থিক সংকটে সে ভর্তি হতে পারেনি। সম্প্রতি দ্বিতীয় রিলিজ স্লিপে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেলেও একই বাধা আবারও সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।
রত্মার মা রহিমা বেগম কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত। এই রোগে তার হাতের দশটি ও পায়ের তিনটি আঙুল হারিয়েছেন। অসুস্থ শরীর নিয়েও তিনি হাঁস-মুরগি পালন আর মানুষের সহায়তায় কোনোমতে সংসার চালান। স্বামী বহু আগেই পরিবার ছেড়ে চলে গেছেন।
রহিমা বেগম বলেন, আমার শরীরের এই অবস্থা, তারপরও মেয়েকে মানুষ করার চেষ্টা করছি। আগে উপবৃত্তির টাকায় কষ্ট করে এইচএসসি পর্যন্ত পড়িয়েছি। এখন ভর্তি করানোর টাকা নেই। কোনোভাবে ভর্তি করালেও পরে লেখাপড়ার খরচ কিভাবে চলবে, সেটাই ভাবছি।
তবু হাল ছাড়েনি রত্মা। সে বলে, আমি ভর্তি হতে চাই, লেখাপড়া করতে চাই। বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হতে চাই, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।
রত্মার এই অদম্য ইচ্ছা এবং তার মায়ের করুণ অবস্থা- সবকিছু মিলে এক চরম মানবিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। একটি মেধাবী মেয়ের উচ্চশিক্ষার আকাঙ্ক্ষা কেবল সামান্য অর্থের অভাবে যেন ধূলিসাৎ না হয়। রত্মাকে কেবল ভর্তি করে দেওয়াই নয়, বরং তার নিয়মিত লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য দরকার স্থায়ী অর্থনৈতিক সহায়তা।
রত্মার গল্প কেবল এক পরিবারের নয়- এটি এক মানবিক সংকটের প্রতিচ্ছবি। একটি মেধাবী মেয়ের ভবিষ্যৎ যেন টাকার অভাবে থেমে না যায়, সেই আহ্বান জানাচ্ছেন স্থানীয় শিক্ষক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
বিত্তবান, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি ও মানবিক সংস্থাগুলো যদি রত্মার পাশে দাঁড়ায়, তবে তার মতো অসংখ্য মেয়ের জীবন বদলে যেতে পারে। হয়তো একদিন রত্মাই রত্ম হবে।
রত্মার শিক্ষা জীবন বাঁচাতে, অনুগ্রহ করে তার পাশে এসে দাঁড়ান।

