অনলাইনঅপরাধআইন আদালতসদরসাতক্ষীরা জেলা

সাতক্ষীরার কুশখালীতে চৌকিদারের নেতৃত্বে মহিলা মেম্বরের বাড়িতে হামলা, মারপিট, ভাংচুর ও লুটপাট

স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর মঞ্জুরুল আলমের নির্দেশে সামছুর চৌকিদারের নেতৃত্বে কুশখালী ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বর শেফালী খাতুনের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় স্থানীয় শতাধিক মানুষ ও সংবাদ কর্মীদের সামনে সরল স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত আক্তারুজ্জামান।

সরেজমিনে ভাদড়া এলাকায় গেলে গোদাঘাটা গ্রামের জালাল উদ্দিন গাজীর ছেলে আকতারুজ্জামান ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ৫ আগস্ট আ.লীগ সরকার পতনের পর বাজারখোলা এলাকার বাল্লক চাঁদের ছেলের দোকানের সামনে থেকে কুশখালী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর মনজুরুল আলম আমাদের নির্দেশ দিলে কুশখালী ইউনিয়নের চৌকিদার শামসুর গাজীর নেতৃত্বে তার ছেলে জুয়েল (৩০), ভাদড়া গ্রামের আনিসুর গাজীর ছেলে সোহাগ (৩২), ভাদড়া গ্রামের হাকিম গাজীর ছেলে আজহারুল ইসলাম (৩৭), শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ সাকিব (২৫) ও ভাদড়া গ্রামের আনসার আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলামসহ কয়েকজনকে নিয়ে আমরা শেফালী মেম্বরের বাড়িতে যাই। ভাদড়া গ্রামের বাইরে আমরা ভাড়াটিয়া হিসেবে এসেছিলাম। এরপর হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে আমরা মোবাইল, দুটি স্বর্ণের দুল, কিছু নগদ টাকা ও ৪টি ছাগল নিয়ে যাই। ছাগলগুলো বাজারখোলা এলাকার রহমদ্দির বাড়িতে রাখা হয়েছিল। পরে পারুলিয়া হাটে ২১ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। স্বর্ণালংকার আবাদেরহাটের উত্তমের দোকানে বিক্রি করা হয়। আমি এ ঘটনার জন্য অনুতপ্ত এবং মেম্বরের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।

ভুক্তভূগী মহিলা মেম্বর শেফালী খাতুন বলেন, গভীর রাতে হাতে শাবল, কুড়াল, দা, জিআই পাইপ, হকিস্টিক নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় আমার স্বামী জামায়াত কর্মী গোলাম রব্বানীকে ঘুমন্ত অবস্থায় বেঁধে বেধড়ক পেটানো হয় এবং তার হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়। দূর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট করে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে।

তিনি আরো বলেন, এতদিন আমি ঘটনার কোন কূলকিনারা পাইনি। তবে সম্প্রতি আকতারুজ্জামান আমার কাছে এসে ক্ষমা চেয়েছে এবং ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে। তারা আমার ঘরে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগাতে চেয়েছিল। এর আগেও আমাকে একবার ডাকাতি করে নিঃস্ব করেছে। আমি এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।

স্থানীয় মেম্বর আজিজার রহমান মাকা বলেন, প্রথমে আমরা ডাকাতির ঘটনাটি বিশ্বাস করিনি। কিন্তু পরে ঘটনার সাথে জড়িত আক্তারুজ্জামানের কথায় প্রমাণিত হয়েছে যে, আমার বউ বের করে নিয়ে যাওয়া সাবেক কৃষকলীগ নেতা ও বর্তমান আ.লীগ নেতা মনজুরুল আলমের নির্দেশে শামসুর চৌকিদারের নেতৃত্বেই শেফালী মেম্বরের বাড়িতে হামলা, মারপিট, ভাঙচুর ও ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত দাবী করছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেম্বার মঞ্জুরুল আলম বলেন- আমি পরে ফোন দিচ্ছি।

সাতক্ষীরা থানার ওসি শামিনুল হক বলেন, এ ব্যাপারে এখনও কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *