শ্যামনগরের বনশ্রী শিক্ষা নিকেতনে ‘উপকূলবন্ধু’ মোস্তফা নুরুজ্জামানকে সংবর্ধনা
ইসমাইল হোসেন, শ্যামনগর: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, সুন্দরবন সুরক্ষা ও বনায়নে অনন্য অবদানের জন্য সুশীলনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী প্রধান মোস্তফা নুরুজ্জামানকে ‘উপকূলবন্ধু’ হিসেবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১০টায় শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের বনশ্রী শিক্ষা নিকেতন প্রাঙ্গণে বনজীবী সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও বৃক্ষ বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সাতক্ষীরা সহ-ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির মাহমুদা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রনী খাতুন। আরও বক্তব্য দেন বনশ্রী শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল করিম, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, সুশীলনের উপ-নির্বাহী প্রধান মো. নাসিরুদ্দিন ফারুক, সাতক্ষীরা পিপলস ফোরামের সভাপতি মো. আব্দুর রশিদ প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে ইউএনও মোছা. রনী খাতুন বলেন, উপকূলবন্ধুর সকল নেতৃত্বে আমরা সম্মিলিত প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছি আমাদের মাটি, আমাদের পানি, আমাদের বনের জন্য। এই উদ্যোগ আমাদের দেখিয়েছে নারীর নেতৃত্ব, তরুণদের অংশগ্রহণ এবং কমিউনিটির ঐক্য দিয়ে কীভাবে বড় পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।
সংবর্ধনা গ্রহণকালে উপকূলবন্ধু মোস্তফা নুরুজ্জামান বলেন, উপকূলের মানুষ, বনজীবী ও পরিবেশের স্বার্থে কাজ করাই আমার জীবনের লক্ষ্য। সুন্দরবনকে রক্ষা করা মানে আমাদের ভবিষ্যৎকে রক্ষা করা। বনজীবী সম্প্রদায়ের এই ভালোবাসা ও সম্মান দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
অনুষ্ঠানের বক্তারা সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উপকূল ও সুন্দরবন রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠান শেষে বনজীবী সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে উপকূলবন্ধু মোস্তফা নুরুজ্জামানকে স্মারক ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পাশাপাশি সুশীলনের পক্ষ থেকে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে চারা গাছ বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বনজীবী সম্প্রদায় থেকে চারজন বক্তা তাঁদের বক্তব্যের মাধ্যমে উপকূলবাসীর প্রতি নিবিড় অবদান ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে মুন্ডা কমিউনিটির ঐতিহ্যবাহী বরণ অনুষ্ঠান দিয়ে। এছাড়া সুশীলনের কালচারাল টিম পরিবেশ সুরক্ষা ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে মনোজ্ঞ ছবি নাটক উপস্থাপন করে। সমগ্র অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন সুশীলনের উপ-পরিচালক শাহিনা পারভিন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, উপকূলবন্ধু তার প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ১৯৯১ সাল থেকে বনজীবীসহ সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন, টেকসই সম্পদ ব্যবস্থাপনা, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো, শিক্ষা, আইসিটি, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, নারী বিকাশ ও ক্ষমতায়নসহ বহুমুখী উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। উপকূলীয় এলাকায় সুন্দরবন সংরক্ষণ, নতুন বনায়ন এবং বননির্ভর মানুষের জীবনমান উন্নয়নে প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা প্রশংসনীয়।