কলারোয়ার উত্তর ভাদিয়ালী খালপাড়-মাঠপাড়ায় রাস্তাহীনতায় চরম ভোগান্তি
মেহেদী সোহাগ, কলারোয়া: কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর ভাদিয়ালী খালপাড় মাঠপাড়ার প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি পরিবার গত ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে বসবাস করছেন। মূলত কৃষিকাজের উপর নির্ভর করে তাদের জীবিকা নির্বাহ হলেও আজও এ গ্রামটি সরকারি কোনো রেকর্ডীয় রাস্তার সুবিধা পায়নি। ফলে প্রতিদিন নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামের মানুষজনকে যাতায়াতের জন্য বাধ্য হয়ে অন্যের ফসলি জমির আইল ব্যবহার করতে হয়। বাজারে কৃষিপণ্য নিতে হলে মাথায় করে দীর্ঘ পথ হেঁটে মূল সড়কে পৌঁছাতে হয়, তারপর সেখানে ভ্যান বা সাইকেলে তোলা যায়। এতে শুধু সময় ও শ্রমই নয়, ব্যয়ও বেড়ে যায়। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ—সবাই এ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। স্কুল, মক্তব ও মাদ্রাসায় যাতায়াতে শিশু-কিশোরদের মারাত্মক সমস্যা হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ফসলি জমির সরু আইল পিচ্ছিল হয়ে পড়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
মাঠপাড়ার বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, একটি সুষ্ঠু জীবনযাপনের জন্য সরকারি রাস্তার বিকল্প নেই। রাস্তাহীনতার কারণে গ্রামবাসীর জীবন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা ইতোমধ্যেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসকের কাছে দ্রুত রাস্তা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। তারা আশা করছেন, সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে একটি সরকারি রাস্তা নির্মাণ করে দেয়, তবে তাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হবে এবং কৃষিপণ্য পরিবহন সহজ হবে।
এ বিষয়ে সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেলিনা খাতুন বলেন, উত্তর ভাদিয়ালী খালপাড় মাঠপাড়ার রাস্তা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষ দুর্ভোগে আছেন। বিষয়টি আমি অবগত আছি এবং ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি এবং প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প পেলেই সবার আগে এ রাস্তাটি নির্মাণ করা হবে।
এলাকাবাসীর বিশ্বাস-একটি সরকারি রাস্তা নির্মাণ হলে তাদের জীবনযাত্রা যেমন স্বাভাবিক হবে, তেমনি কৃষিপণ্য পরিবহন, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবায়ও ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। তবে কবে নাগাদ তারা সেই কাঙ্ক্ষিত রাস্তা পাবেন—সেই আশাতেই দিন গুনছেন উত্তর ভাদিয়ালী খালপাড় মাঠপাড়ার গ্রামবাসী।

