অনলাইনঅপরাধআইন আদালতকালিগঞ্জখুলনাডুমুরিয়াসাতক্ষীরা জেলাস্বাস্থ্য

এ্যম্বুলেন্স খাদে পড়ে স্ত্রীর মৃত্যু: কালিগঞ্জের নলতার ডায়াবেটিক হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার: এ্যম্বুলেন্স নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে তাসলিমা সুলতানা ময়না (৪৫) নামের এক গৃহবধুর মৃত্যুর ঘটনায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ডায়াবেটিক হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ও পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার কালিগঞ্জের পূর্ব মৌতলা গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম এ অভিযোগ করেন।

কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব মৌতলা গ্রামের মানাউল্লাহ মোল্লার ছেলে রিয়াজুল ইসলাম তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, পিঠে টিউমার আক্রান্ত ছোট ভাই আরিফুল ইসলামকে ১৩ আগষ্ট সকালে খুলনা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য নলতা ডায়াবেটিকস হাসপাতালের নিয়ন্ত্রনাধীন মৌতলা গ্রামের আনছার আলীর ছেলে শাহীনুর রহমানের এ্যম্বুলেন্সটি(ঢাকা মেট্রো-ছ-৭১-২২২৩) সাড়ে চার হাজার টাকায় ভাড়া করেন তিনি। সে অনুযায়ি তিনি নিজে, ভাই আরিফুল, ভাইয়ের স্ত্রী তাসলিমা সুলতানা ময়না ও ভাগ্নে আব্দুস সালাম বুধবার সকাল ৬টার দিকে বাড়ি থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।

এম্বুলেন্স চালাচ্ছিল ভদ্রখালি গ্রামের শওকত আলীর ছেলে নূর ইসলাম বাবু। সকাল ৯টার দিকে ডুমুরিয়া নতুন রাস্তার মোড়ের পাশে মোল্লা বাড়ির সামনে অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে একটি লাইট পোষ্টে ধাক্কা মারে। এ্যম্বুলেন্সটি উল্টে যেয়ে পার্শ্ববর্তী পানিভর্তি খাদে পড়ে। এতে তার ভাইয়ের স্ত্রী তাসলিমা সুলতানা ময়না মারা যায়। তারা দুই ভাই ও ভাগ্নেকে পানির ভিতর থেকে উদ্ধার করে ডুমুরিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চালক বাবু পালিয়ে যায়।

রাত ৮টার দিকে তারা তাসলিমা খাতুন ময়নার লাশ, অসুস্থ ভাই আরিফুল ইসলামকে নিয়ে বাড়িতে পৌঁছান। বৃহষ্পতিবার সকালে ময়নার লাশ দাফন করা হয়। বকেয়া বেতন চাওয়াকে কেন্দ্র করে গত ২৩ জুল্ইা ওই এম্বুলেন্সের প্রকৃত চালক দেবহাটার মাটিকুমড়া গ্রামের খলিলুর রহমান ও ওই ডায়াবেটিক হাসপাতালের সাবেক কর্মী সমীক এর মাধ্যমে জানতে পারেন যে, দুর্ঘটনার দিন এম্বুলেন্সটি যে চালাচ্ছিল সে ভদ্রখালি গ্রামের শওকত হোসেনের ছেলে নূর ইসলাম বাবু। গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা তার মাত্র কয়েক দিনের।

এছাড়া এম্বুলেন্সটি ছিল ফিটনেসবিহীন। যে কারণে তার ভাইকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে ভাইয়ের স্ত্রী ময়নাকে জীবন দিতে হলো। একইসাথে তার ভাই আরিফুলের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় সে মারা যেতে পারে। এর প্রতিকার চান তিনি। আর কোন ব্যক্তি যাতে এভাবে প্রাণ না হারায় সেজন্য তিনি ক্লিনিকের দালালরুপী চালাক নূর ইসলাম বাবু ও নলতা ডায়াবেটিক হাসপাতালের মালিক মিলন হোসেনকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানান তিনি। তবে নিজেকে রক্ষায় বাবু ও মিলন হোসেন কালিগঞ্জের সফু ও শিমুলের মাধ্যমে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন বলেন অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নলতা ডায়াবেটিক হাসপাতালের মালিক মিলন হোসেন এম্বুলেন্স ও ক্লিনিক যে ত্রুটিপূর্ণ তা অস্বীকার না করেই বলেন, নূর ইসলাম বাবু একজন নতুন চালক। তবে তার ক্লিনিকে খলিলুর রহমান এম্বুলেন্স চালক হিসেবে কাজ করার সময় অনিয়ত ও দূর্ণীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় তাকে বাদ দেওয়া হয়। তবে তার বকেয়া টাকা দিয়ে দেওয়া হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *