অনলাইনঅপরাধআইন আদালতসদরসাতক্ষীরা জেলাস্বাস্থ্য

সাতক্ষীরার বাবুলিয়ায় শিশু ধর্ষণ! ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আদালতে জবানবন্দি

স্টাফ রিপোর্টার: ১১ বছরের এক এতিম শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামী শেখ শহীদুল ইসলামকে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। সোমবার বিকেল ভিকটিম সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তনিমা ম-ল তণ¦ীর কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামী শহীদুল ইসলাম (৫৫) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশঘাটা গ্রামের শেখ বদরউদ্দিন হায়দারের ছেলে ও বাবুলিয়া পোষ্ট অফিসের পোস্ট মাষ্টার।

মামলা ও ঘটনার বিবরনে জানা যায়, মাকে তালাক দিয়ে বাবার অন্যত্র বিয়ে ও পরে মায়ের অন্যত্র বিয়ে হওয়ায় এতিম হয়ে মাঝে মাঝে খালার বাড়ি ও আত্মীয়দের বাড়িতে সে অবস্থান করে থাকে ১১ বছরের এক নারী শিশু । কখনো খাওয়া জোটে , আবার কখনো জোটে না। মায়ের সঙ্গে দেখা হবে এই আশায় রবিবার সকাল ১০টার দিকে বাবুলিয়া পোষ্ট অফিসের সামনে মেয়েটি অবস্থান করছিলো। এ সময় পোষ্ট মাষ্টার শহীদুল ইসলাম (৫৫) তাকে ১০ টাকার বিনিময়ে অফিস কক্ষে থাকা পরিত্যক্ত কাগজপত্র ফেলে দেওয়ার কথা বলে ১০ টাকা দিতে চান। কাগজপত্র ফেলে দিয়ে আসার পর ঘরটি ঝাট দিতে বলে ওই পোষ্ট মাষ্টার। পরে তাকে ধর্ষণ করে ওই পোষ্ট মাষ্টার।

সোয়া ১০টার দিকে জগন্নাথপুর পোষ্ট অফিসের রানার ইব্রাহীম পোষ্ট অফিসে এসে ওই মেয়েকে কাঁদতে দেখেন। তাকে ডেকে নিয়ে শহীদুলের দোকানে পাউরুটি, চিপসহ কিছু খাবার খাওয়ায়। ঘটনা তাকে খুলে বলায় স্থানীয় খালেকের মাধ্যমে শিশুটির মাকে ডেকে আনা হয়। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ জনতা পোষ্ট মাষ্টারকে আটক করে গণধোলাইয়ের পর পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ উদ্ধার করে ভিকটিমকে সদর হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেয়।

এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদি হয়ে রবিবার সন্ধ্যায়পোষ্ট মাষ্টার শহীদুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন । ভিকটিম হাসপাতালে ভর্তি না হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে রবিবার রাত ৮টার দিকে সদর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। একইভাবে সোমবার বিকেলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তনিমা ম-ল তণ¦ীর খাস কামরায় ওই ভিকটিম ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয়।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ ডালিয়া আক্তার জানান, রবিবার রাত সাড়ে ৮টায় ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক খায়রুল কবীর আনাম জানান, ২২ ধারায় জবানবন্দি শেষে ভিকটিমকে তার মা অথবা প্রকৃত বাবার জিম্মায় দেওয়া হবে। কিন্তু ভিকটিমের মা দ্বিতীয় বিয়ে করায় মামলার বাদি হলেও মেয়েকে জিম্মায় নিতে আসেননি। ফলে তাকে সদর থানা পুলিশের জিম্মায় রাখা হবে না কি করা হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আসামী শহীদুলকে সোমবার বিকেলে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন ছাড়া অনেকেই ধর্ষণের ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *