অনলাইনকালিগঞ্জশিক্ষাঙ্গনসাতক্ষীরা জেলা

কালিগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করায় ভুক্তভোগী শিক্ষাকাকে বদলি

স্টাফ রিপোর্টার: নানাবিধ অনিয়ম-দূর্নীতি সহ, কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় যৌন হয়রানির শিকারের অভিযোগ করার দু,দিন পর অভিযোগকারী শিক্ষিকার হাতে ধরিয়ে দিল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বদলির আদেশ।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমীর গত ৯ জুলাই স্বাক্ষরিত ৩৮.০১.৮৭০০. ০০০.০৪. ০০৪. ২৫- ১২৬৫ নং স্মারকে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে ৪৬ নং দক্ষিণ শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যৌন হয়রানীর শিকার অভিযোগকারী শিক্ষিকা আফরোজা সুলতানাকে আহছানিয়া ঘোজাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। আদেশের কপি বৃহস্পতিবার সাড়ে ১০ টার দিকে কালিগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ কুমার নন্দী অফিসে ডেকে আদেশের কপি ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষিকার হাতে ধরিয়ে দেয়। যৌন নিগ্রহের শিকার ঐ শিক্ষিকা আগামী ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে বদলিকৃত বিদ্যালয়ে যোগদান না করলে ১৪ জুলাই থেকে ঐ ভুক্তভোগী শিক্ষিকাকে অবমুক্ত বলে আদেশে উল্লেখ করেন।

৪৬ নং দক্ষিণ শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান বাবলু তারই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আফরোজা সুলতানাকে দীর্ঘদিন যাবত কু-প্রস্তাব ও যৌন হয়রানি করে আসছিল। রাজি না হওয়ায় ঐ শিক্ষিকার অনেক বিয়ের সম্বন্ধ কুৎসা রটিয়ে ভেঙে দিয়ে আসছিল। ইতো পূর্বে প্রধান শিক্ষক ভদ্রখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকতে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় সেখান থেকে ঝাঁটাপেটা করে এলাকার অভিভাবক এবং গ্রামবাসী তাড়িয়ে দিলে বদলি হয়ে এ বিদ্যালয়ে আসে।

এ বিষয়ে উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ভিত্তিতে কৌশলে ভুক্তভোগী শিক্ষিকার বাবা সাবেক সহকারি প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জাফরুল্লাহ সরদারকে মীমাংসার নাম করে প্রধান শিক্ষক বাবলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ কালিগঞ্জ থানা থেকে লিখিতভাবে প্রত্যাহার করিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে একই সাথে করা পূর্বের অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে শিক্ষিকা আফরোজাকে ডেপুটেশনে বদলি, বিভাগীয় মামলা, সহ চাকরিচ্যুত করার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে শিক্ষিকা আফরোজাকে শায়েস্তা করার জন্য প্রচেষ্টার সফলতা লাভ করে।

এ প্রেক্ষিতে নিজেকে বাঁচাতে ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষিকা গত ৭ জুলাই প্রতিকার চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে গাত্রদাহ শুরুর দু’দিন পর এই বদলির আদেশ দেওয়া হলো।

তবে এ ঘটনার সত্যতা জানার জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ব্যবহৃত ০১৭১—-৬০ নম্বরে এবং কালিগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ব্যবহৃত ০১৭১৭—-৭৫ নম্বরের মুঠোফোনের একাধিকবার ফোন দিলেও দু,জনের কেউ রিসিভ করেননি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *