পুকুর খননের আড়ালে উচ্ছেদের চক্রান্ত: কালিগঞ্জে দিনমজুর পরিবার চরম সংকটে
তাপস কুমার ঘোষ, কালিগঞ্জ: কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের গোয়ালপোতা গ্রামে পুকুর খননের আড়ালে এক হতদরিদ্র দিনমজুর পরিবারকে ঘরছাড়া করার অভিযোগে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকাজুড়ে।বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহিদুল ইসলাম নামের এক দিনমজুরের একমাত্র বসতভিটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী মান্নান গাজী ও তার ছেলে মাহবুব গাজী পরিকল্পিতভাবে ভেকু (খননযন্ত্র) চালিয়ে শহিদুলের ঘরের একাংশ কেটে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী শরিফা খাতুন জানান, “দিনের পর দিন ঘরের একদম লাগোয়া মাটি কাটছিল। একসময় মাটি সরে গিয়ে ঘরের একাংশ ধসে পড়ে পুকুরে। এখন আমাদের পরিবার খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে।”
এ ঘটনায় চরম ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানান, বারবার জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্যদের মাধ্যমে খননকাজ বন্ধের অনুরোধ জানানো হলেও অভিযুক্তরা কর্ণপাত করেননি। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুজা মন্ডল ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের ওই নির্দেশ উপেক্ষা করে অভিযুক্তরা পুনরায় ভেকু এনে খননকাজ চালিয়ে যাচ্ছে, যা পুরো গ্রামের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একে “স্পষ্টভাবে বেআইনি ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন”বলে উল্লেখ করে বলেন, “এ ঘটনায় দ্রুত প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন, নইলে এই ধরণের অন্যায় আরও বাড়বে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত মান্নান গাজী ও মাহবুব গাজী দাবি করেছেন, তারা নিজেদের জায়গায় কাজ করছেন। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত তারা মালিকানা প্রমাণে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।এলাকাবাসীর জোর দাবি, অবিলম্বে খননকাজ বন্ধ করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ প্রদান নিশ্চিত করা হোক। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।