সাতক্ষীরায় যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
গাজী হাবিব: একাত্তরের পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা যেসব মেধাবী সন্তানকে হত্যা করেছিল, সেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে জাতি। সারাদেশের মতো সাতক্ষীরাতেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মিজ্ আফরোজা আখতার ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে নিয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুল ইসলাম শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা প্রশাসক মিজ্ আফরোজা আখতারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বিপিএম, সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল হাসেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমান, ছাত্র সমন্বয়ক আরাফাত হোসাইন প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন- ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা জাতি যখন আনুষ্ঠানিক বিজয়ের প্রহর গুনছিল ঠিক তার দুইদিন আগেই বাঙালি শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বেছে নিয়ে তাদেরকে হত্যা করেছিল এবং বাংলাদেশকে জ্ঞানশূন্য ও বুদ্ধিহীন করতে চেয়েছিল পাক-হানাদার বাহিনীরা। তখন থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে ১৪ই ডিসেম্বর এই দিনটিতে শহীদদের জন্য উৎসর্গ করা হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে।
বক্তারা আরো বলেন- শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক স্মরণীয় ও বেদনাবিধুর অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে স্বাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বার্থে দেশের মেধাবী ও শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল। আজকের এই দিনে জাতি তাদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এবং তাদের আদর্শকে বুকে ধারণ করে সামনের পথ চলার শক্তি লাভ করে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস শুধু একটি আনুষ্ঠানিক স্মরণে সীমাবদ্ধ না রেখে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। একই সঙ্গে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি শক্তিশালী, স্বনির্ভর ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তারা।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ শাহীনুর চৌধুরী সহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

