অনলাইনইতিহাস ঐতিহ্যজীবনযাপনতালারাজনীতিলিডশিক্ষাঙ্গনসদরসাতক্ষীরা জেলাসারাবাংলা

সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে নারীকেও এগিয়ে নিতে হবে- ডিসি আফরোজা আখতার

গাজী হাবিব: সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মিজ আফরোজা আখতার বলেছেন- সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে সমাজের নারী সমাজকেও সমানভাবে এগিয়ে নিতে হবে। নারীকে বাদ রেখে কোনো কাজেই পরিপূর্ণ সফলতা আসে না, কারণ পরিবার, সমাজ ও কর্মক্ষেত্রের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমাদের সমাজে এখনো বহু পরিবার আছে যেখানে মেয়েরা অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার হয়। ছেলে সন্তানের মতো মেয়েরাও সমান সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখে। পারিবারিক বৈষম্য দূর করে কন্যা সন্তানকে এগিয়ে নিতে পারলেই নারীরা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অংশীদার হবে।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন- নারীমুক্তির জন্য সামাজিক বাধা বিপত্তি সর্বোপরি বহু আন্দোলন- সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন বেগম রোকেয়া। নারীজাতিকে যথাযোগ্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার প্রয়াসে বেগম রোকেয়ার অসামান্য অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

মঙ্গলবার (০৯ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলা মহিলা অধিদপ্তর ও জাতীয় মহিলা পরিষদ সাতক্ষীরার উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মিজ আফরোজা আখতার বলেন, শিশুকাল থেকেই ছেলে-মেয়ের মাঝে সমতা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষায়, পুষ্টিতে, সামাজিক অংশগ্রহণে এবং প্রযুক্তি জ্ঞানে মেয়েদের এগিয়ে নিতে হবে। পরিবার ও সমাজ যদি মেয়েদের পাশে দাঁড়ায়, তবে তাদের এগিয়ে যাওয়া কেউ থামাতে পারবে না। এসময় ‘আমিই বেগম রোকেয়া’ প্রতিপাদ্যের উপর ভিত্তি করে বাল্য বিবাহ এবং বেগম রোকেয়ার ভূমিকা শীর্ষক একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

এর আগে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রা শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমির উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, জেন্ডার ডেভেলপমেন্টের সভানেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি, গর্বিত জয়িতা জননী, রত্নগর্ভা মা লুৎফুন্নেছা বেগম, সংগ্রামী নারী মেরিনা খাতুন প্রমুখ।

জেলা মহিলা অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজমুন নাহারের সঞ্চালনায় এ সময় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার ফাতেমা জোহরা, ওসিসি প্রোগ্রাম অফিসার আব্দুল হাই সিদ্দিক, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুমনা আইরিন, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, জাতীয় মহিলার সংস্থার জেলা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান, স্বদেশ’র নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, জেলা শিক্ষা অফিসের সুপারভাইজার আ ন ম নাজমুল উলা, জেলা দূর্ণীতি প্রতিরোধ কমিটির সাকিবুর রহমান বাবলা, সিডো এর নির্বাহী পরিচালক শ্যামল কুমারসহ জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও, উন্নয়ন সংস্থা ও নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, নারী অধিকার, নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বাড়াতে হবে। রোকেয়া দিবসের চেতনায় নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে জেলায় নির্বাচিত ৫ ক্যাটাগরিতে ৫ জন নারীকে ‘অদম্য নারী পুরস্কার’ হিসেব সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। তারা হলেন- অর্থনৈতিকভাবে সাফাল্য অর্জনকারী সদরের রায়হাতুল জান্নাত রিমি, শিক্ষা ও চাকুরীক্ষেত্রে সাফাল্য অর্জনকারী সদরের গুলশান আরা বেগম, সফল জননী সদরের লুৎফুন্নেছা বেগম, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুনরুপে জীবন শুরু করা শ্যামনগরের মেরিনা খাতুন ও সমাজ উন্নয়নে সদরের মোহিনী পারভীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *