অনলাইনকালিগঞ্জজীবনযাপনসাতক্ষীরা জেলা

কালিগঞ্জের বাজারগ্রাম মৌজায় উচ্ছেদ আতঙ্কে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

মাসুদ পারভেজ/ তাপস কুমার ঘোষ, কালিগঞ্জ: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কুশুলিয়া ইউনিয়নের বাজারগ্রাম মৌজায় চার শতাধিক হতদরিদ্র পরিবারের দীর্ঘ দিনের বসতভিটা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এক ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফফার, উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমন্বয়ক মারুফ হাসান, সমাজকর্মী মাসুদ, মমিন কামরুজ্জামান বাবু, মাওলানা মাসুদ হোসেন, মোছাঃ রাবেয়া খাতুন, মনিরা পারভিনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। পরে ইদ্রীস আলীর নেতৃত্বে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় বাজারগ্রাম মৌজার জমি ১৯৬২ সালের এসএ খতিয়ানে স্থানীয় বাসিন্দাদের মালিকানায় ছিল। পরবর্তী সময়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ১৯৬৪–৬৫ সালে প্রায় ২০০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করলেও মালিকরা আজও ক্ষতিপূরণ পাননি। মাঠ জরিপ (৩০ ধারা) এবং বি.আর.এসএ অনেকের নাম অন্তর্ভুক্ত থাকলেও কয়েক পরিবার রেকর্ড না পাওয়ায় দেওয়ানী মামলা নং ৮৬/২২ বর্তমানে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।স্থানীয়দের দাবি, তারা এ এলাকায় প্রায় ১১০ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন। রয়েছে পূর্বপুরুষদের কবরস্থান ও স্থায়ী বসতভিটা। এত দীর্ঘ সময়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কখনো উচ্ছেদ বা দখল কার্যক্রম পরিচালনা করেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক উচ্ছেদের ঘোষণা শিশু, নারী, প্রবীণসহ সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক তৈরি করেছে। শীতকাল, চলমান বার্ষিক পরীক্ষা এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা সামনে হওয়ায় এখন উচ্ছেদ হলে শত শত মানুষ মানবিক সংকটে পড়বে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।বক্তারা বলেন, আমরা উন্নয়নবিরোধী নই। তবে সড়ক নির্মাণে যতটুকু জমি প্রয়োজন কেবল ততটুকুই নেওয়া হোক অতিরিক্ত কোনো বাড়িঘর ভাঙা যাবে না।ভূমি সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় বৃহৎ উচ্ছেদ অভিযানকে তারা অমানবিক ও অযৌক্তিক হিসেবে উল্লেখ করেন এবং আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত বসবাসের সুযোগ বজায় রাখার আহ্বান জানান।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্মারকলিপির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *