আশাশুনিতে লোনা পানির অনুপ্রবেশ ও বালু উত্তোলন বন্ধে মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান
স্টাফ রিপোর্টার: আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অব্যাহতভাবে লবণ পানির অনুপ্রবেশে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে কৃষিজমি, বসতবাড়ি, মিঠাপানির উৎস এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্য। দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন, যার ফলে বাড়ছে ভাঙন, জলাবদ্ধতা ও পরিবেশগত ঝুঁকি।
এই দুই সংকটের দ্রুত ও কার্যকর সমাধানের দাবিতে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের উদ্যোগে সচেতন নাগরিক, স্থানীয় সাংবাদিক, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, নারী-পুরুষ, যুবসমাজ ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনটি উপজেলা চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আব্দুল হান্নান। বক্তারা বলেন, আশাশুনির উপকূলীয় এলাকা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বহুদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাঁধের দুর্বলতা, ড্রেজিংয়ের অভাব, অপরিকল্পিত মাছের ঘের এবং অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে লবণ পানির অনুপ্রবেশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে হাজারো বিঘা কৃষিজমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। মিঠাপানির উৎস নষ্ট হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়রা বিশুদ্ধ পানি সংকটে দিনযাপন করছেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, একের পর এক জমিতে লবণ পানি ঢুকে ধান, সবজি, গাছপালা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে বহু পরিবার ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বক্তারা অবিলম্বে লবণ পানি রোধে কার্যকর বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ, নদী-খাল পুনঃখনন এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসনসহ দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিশ্চিত করার দাবি জানান।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আশাশুনির মানবিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে সরকারি হস্তক্ষেপ ও টেকসই ব্যবস্থাপনা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
স্থানীয়রা আশা করছেন, দীর্ঘদিনের এই সংকট দূরীকরণে প্রশাসনের সক্রিয় পদক্ষেপ তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন বয়ে আনবে।

