কলারোয়াতালারাজনীতিসাতক্ষীরা জেলাসারাবাংলা

সাতক্ষীরা ১ আসনে বিএনপি জামায়াত আড্ডাহাড্ডি লড়াই, স্বতন্ত্র প্রার্থী শহিদুল ইসলাম

সেকেন্দার আবু জাফর বাবু, তালা: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। যদিও এই আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিগত দিনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যেই হয়ে থাকে, তবে এবার এই দুই দলের প্রার্থীরাই সমানভাবে সরব রয়েছেন।

সাতক্ষীরা-১ আসনে বিএনপি ভেদাভেদ ভুলে সাংগঠনিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনী মাঠে প্রচার চালাচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি এই আসনে দলের অবস্থান শক্তিশালী করতে কাজ করছেন।

শক্ত অবস্থানে জামায়াত এই আসনটি দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতে ইসলামীর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় জামায়াত নেতারাও নির্বাচনে ছাড় দিতে নারাজ এবং তাদের প্রার্থী অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহর পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। জামায়াত এই আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মতে, উভয় দলেরই শক্তিশালী জনভিত্তি ও সক্রিয় কর্মী বাহিনী থাকায় ভোটের লড়াই বেশ জমজমাট হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে হাবিবুল ইসলাম হাবিব এবং জামায়াতের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে।

সামগ্রিকভাবে, সাতক্ষীরা-১ আসনের নির্বাচনী মাঠে বিএনপি ও জামায়াত উভয়ই সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে এবং দুই দলের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী তালা মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন । দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরার তালা- কলারোয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসন। এ আসনে দুটি উপজেলার ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় সাড়ে চার লক্ষাধিক ভোটার রয়েছে। ৫ই আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিএনপি কিংবা জামায়াত নেতাকর্মীরা বেশ উজ্জীবিত হলেও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হওয়ায় আত্মগোপনে রয়েছেন আওয়ামীলীগের পদধারী নেতা কর্মী-সমর্থকরা।

সেই সঙ্গে জাতীয় পার্টির মধ্যেও দেখা যাচ্ছে না তেমন চাঙ্গাভাব। সেই সাথে অন্তরালে রয়েছে ১৪ দলের অন্যান্য শরিকরাও। জানা গেছে, তালা-কলারোয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসন থেকে ১৯৮৬ সালে আওয়ামীলীগের সৈয়দ কামাল বখত সাকী, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির সৈয়দ দীদার বখত, ১৯৯১ সালে জামায়াতের আনসার আলী, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সৈয়দ কামাল বখত সাকী, ১৯৯৯ সালের উপ-নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বি এম নজরুল ইসলাম, ২০০১ সালে বিএনপি ৪ দলিও জোট বদ্ধ ভাবে হাবিবুল ইসলাম হাবিব, ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগের ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নৌকা নিয়ে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

সাতক্ষীরা -১ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক এমপি, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে, তালা-কলারোয়ার মানুষের কাছ থেকে দূরে রাখতে মিথ্যা মামলায় ৭০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তালা-কলারোয়ার মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে, তা ভোলার নয়, তাদের পাশে থেকেই আজীবন সেবা করতে চাই। ভোটাররা আমাকে ভালোবেসে দুই বার এমপি নির্বাচিত করেছে। এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছি আমি বিশ্বাস করি জনগণ আবারও আমাকে ভোট দিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ দেবে।

এ আসনে জামায়াতের এমপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জতুল্লা বলেন, আমি নির্বাচিত হলে ধর্ম বর্ণ সকল শ্রেণী পেশার মানুষদের সাথে নিয়ে এলাকার উন্নয়ন করব। দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজ মুক্ত, ন্যায়ভিত্তিক ও সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলবো।আজ দেশের প্রশাসন, শিক্ষা, রাজনীতি ও অর্থনীতির সর্বত্র দুর্নীতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আল্লাহভীতি, দেশপ্রেম ও মানবসেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে চলছি। দুর্নীতির সাথে কোন আপোষ হবে না, তাহলেই আমরা একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *