সাতক্ষীরা-৩ আসনে বিক্ষোভ সমাবেশ চলছেই—-
তাপস কুমার ঘোষ, কালিগঞ্জ: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার( ১৮ নভেম্বর) বিকালে সাতক্ষীরা-৩ ( কালিগঞ্জ -আশাশুনি) আসনে বিক্ষোভ ,মানববন্ধন ,সড়ক অবরোধের মতো লাগাতার কর্মসূচির ১৭ দিনে সরওয়ার্দী পার্কে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেন মনোনয়ন বঞ্চিত ডাঃ শহিদুল আলমের অনুসারীরা। বিএনপি গত ২ নভেম্বর ২৩৭ আসনের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে।
এরপর থেকে সারা দেশের বঞ্চিতদের ন্যায় সাতক্ষীরা-৩( কালিগঞ্জ- আশাশুনি )আসনে কাজী আলাউদ্দিনকে হটিয়ে মনোনয়ন বাতিলের দাবি করে ডাঃ শহিদুল আলমের মনোনয়নের দাবিতে তাঁর অনুসারীরা নানান কর্মসূচি পালন করছেন। অপরদিকে মনোনয়ন পাওয়া কাজী আলাউদ্দিন ও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়ে সমাবেশ ও প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। মূলত কালিগঞ্জ- আসাশুনি উপজেলার বিএনপির ২ নেতার নেতাকর্মী, অনুসারীরা বিভক্তি হয়ে পড়েছে। এতে করে লাগাতার কর্মসূচির কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে মনোনয়ন পাওয়া কাজী আলাউদ্দিন সকালে ঢাকার বাসায় মনোনয়ন বঞ্চিত ডাঃ শহিদুল আলমের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও দেখা না দেওয়ায় নিরাস হয়ে ফিরতে হয়।
এ প্রসঙ্গে কাজী আলাউদ্দিন বলেন মনোনয়ন না পাওয়া ডাঃ শহিদুল আলমের সঙ্গে মিলেমিশে ধানের শীষে কাজ করার জন্য তার বাসায় দেখা করতে এসেছিলাম। কিন্তু তিনি দেখা না দেওয়ায় আমি ফিরে এসেছি। এ
প্রসঙ্গে সমাবেশে বক্তারা বলেন মঙ্গলবার সকালে ডাঃ শহিদুল আলমের বাসায় গেলে ডাঃ শহিদুল আলমের স্ত্রী অসুস্থ অবস্থায় শয্যাশায়ী থাকায় দেখা করতে না পারায় তার বেডরুমে ঢুকে ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাজী আলাউদ্দিনকে আইনের আওতায় এনে কালিগঞ্জ আশাশুনি এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন সমাবেশ থেকে।
গতকাল ডাঃ শহিদুল আলমের মনোনয়নের দাবিতে হাজার, হাজার মহিলা, পুরুষ নেতাকর্মী ও অনুসারীরা মিছিল সহকারে সোহরাওয়ার্দী পার্ক ময়দানের সমাবেশে এসে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। সমাবেশে বক্তারা বলেন দলমত ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ডাঃ শহিদুল আলম কে মনোনয়ন দিতে হবে। মনোনয়ন না দেওয়া এবং তাদের দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কেউ ঘরে ফিরে যাবে না। এতে যদি দল থেকে কাহকে বহিষ্কার করা হয় তাহলে তারা গণপতাগের হুঁশিয়ারি দেন। তারা আরো বলেন দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের সময় তারা ডাঃ শহিদুল আলমকে কাছে পেয়েছে। তার কাছে ধর্মবর্ণ, দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সব ধরনের মানুষ সেবা পেয়ে তাকে গরীবের ডাক্তার হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে জনপ্রিয়তা যাচাই করে ডাঃ শহিদুল আলমের মনোনয়ন দাবি করেন ধানের শীষের বিজয়ের জন্য।
অপরদিকে মনোনয়ন পাওয়া কাজী আলাউদ্দিনের সমর্থকরা সমাবেশের ডাক দিয়েছেন। গত কালকের সমাবেশে জেলা বিএনপি সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সাবেক আহবায়ক শেখ নুরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপি’র সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম , বিএনপি নেতা নলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আজিজুর রহমান, স্বচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল সেলিম, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সেলিম হোসেন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আলাউদ্দিন সোহেল, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব পারভেজ হোসেন সহ কালিগঞ্জ উপজেলা এবং আশাশনি উপজেলার বিএনপির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ শেষে আজ আবারও লাগাতার কর্মসূচির বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন।

