সাতক্ষীরায় গ্রীন ইনোভেশন ফেয়ার সবুজ উদ্ভাবনী মেলা
স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরায় পরিবেশ বান্ধব উদ্যোক্তাদের নিয়ে সবুজ উদ্ভাবন মেলা-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরা তুফান কনভেনশন সেন্টারে (লেকভিউ)তে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সিডো’র বাস্তবায়নে ও একশনএইড বাংলাদেশ’র সহযোগিতায় এ ফর টি প্রকল্পের আওতায় এ উদ্ভাবন মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
দ্রুত নগরায়ন ও শিল্পায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশেষ করে উপকূলীয় ও শহরাঞ্চলে প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে তরুনরাই হয়ে উঠছে পরিবর্তনের চালিকাশক্তি। তারা স্থানীয় পর্যায়ে উদ্ভাবনী, পরিবেশবান্ধব সমাধান তৈরী করছে এবং নিজেদের কমিউনিটিতে টেকসই উন্নয়নের অনুশিলন ছড়িয়ে দিচ্ছে। তবুও তাদের অনেক সৃজনশীল উদ্যোগ পরিচিতি, প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা, প্রয়োজনীয় সম্পদ এবং বাজারে প্রবেশের সুযোগের অভাবে পিছিয়ে পড়ছে। এই বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে সবুজ উদ্ভাবনী মেলায় আয়োজন করা হয়েছে।
গ্রীণ ইনোভেশন ফেয়ারের সবুজ উদ্ভাবন মেলায় সিডো সাতক্ষীরার প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ বদরুদ্দোজা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক সঞ্জীত কুমার দাশ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক নাজমুন্নাহার, জেলা সমাজসেবা অফিসের সহকারী পরিচালক মো: রোকনুজ্জামান, টিটিসি সাতক্ষীরার অধ্যক্ষ অপু হালদার, জেলা দূর্ণীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ডা. আবুল কালাম বাবলা, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: মুনির হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: শাহিনুল ইসলাম, সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম, জেডিএফ সাতক্ষীরার সভানেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি, সাংবাদিকবৃন্দ, এনজিও প্রতিনিধি ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারগন।
গ্রীণ ইনোভেশন ফেয়ারে ১৫ টি স্টলে সবুজ উদ্যোক্তারা তাদের প্রডাক্ট প্রদর্শন করেন। যার মধ্যে সিদ্দিকীস গ্রীন টেকনোলজি, প্লাস্টিকের বেতি দিয়ে বেড়া, ঝুঁড়ি ও ঘরের সিলিং তৈরি, পরিবেশবান্ধব ছাদকৃষি, ধোঁয়াবিহীন ‘ইকোব্রিক বা সবুজ ব্রিকেট’ ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন, বাঁশ দিয়ে ঝুঁড়ি, চাটাই, খাড়াই ও কুলা তৈরি, চিপস এর মোড়ক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মাদুর ও আসন তৈরী, অর্গানিক পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে (পানি শোধন) বিশুদ্ধ পানি গ্রামীণ জনগণের মাঝে বিতরণ, মাশরুম চাষ, অর্গানিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ, পরিবেশবান্ধব পাট দিয়ে ব্যাগ ও পুতুল তৈরি, মৌচাকের মোম দিয়ে বিভিন্ন ধরনের শোপিস তৈরি, জাষ্ট অর্গানিক ফুডের নিমপাতা ও কাচা হলুদ দিয়ে নিম সাবান, নারকেল তেল ও সোপবার দিয়ে এলোভেরা, অলিভ ওয়েল ও আলমন্ড তৈরী করা উল্লেখযোগ্য।
বক্তারা বলেন- তরুণ নেতৃত্বে সবুজ উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা এবং তাদের পরিবেশবান্ধন সমাধান ও জলবায়ু স্মার্ট ব্যবসায়িক উদ্যোগ প্রদর্শনের সুযোগ তৈরী করা। একই সাথে তরুণ উদ্ভাবক, সরকারী- বেসরকারী খাত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে সহাযোগিতা ও জ্ঞান বিনিময় বাড়ানো। টেকসই ভোগ, উৎপাদন ও সার্কুলার ইকোনমি বিষয়ে নীতি সংলাপ ও সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি নারী, প্রতিবন্ধী ও প্রান্তিক তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহন নিশ্চিত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক সবুজ রুপান্তর প্রক্রিয়া গড়ে তোলা ই হলো এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য।
গ্রীণ ইনোভেশন ফেয়ারের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন একশনএইড বাংলাদেশ এর সিনিয়র অফিসার মাহিনুর রহমান । গ্রীণ ইনোভেশন ফেয়ারে পরিবেশবান্ধন সবুজ উদ্যোক্তা বিষয়য়ক মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সাতক্ষীরা ইয়ূথ হাবের সভাপতি সাকিব হাসান।
শেষে গ্রীণ ইনোভেশন ফেয়ারে উপস্থিত সবুজ উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে ৩ জনকে নির্বাচিত করা হয়- যারা পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ের গ্রীণ ইনোভেশন ফেয়ারে তাদের প্রোডাক্ট প্রদর্শন করার সুযোগ পাবে। এসময় প্রত্যেক স্টলকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

