অনলাইনঅপরাধআইন আদালতইতিহাস ঐতিহ্যজাতীয়ধর্মশিক্ষাঙ্গনসারাবাংলা

বোরকা-হিজাব পরায় ঢাবি শিক্ষার্থীকে ‘থুতু’ নিক্ষেপ ও হেনস্তার অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট: বোরকা, হিজাব ও নিকাব পরিধান করার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় এক নারী শিক্ষার্থীর গায়ে থুতু নিক্ষেপ ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের (কার্জন হল এলাকা) সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ও বিভিন্ন হল সংসদের নেতাকর্মীরা।

প্রক্টর অফিসে অভিযোগ জমা দেওয়া শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সদস্য সাবিকুন্নাহার তামান্না সাংবাদিকদের বলেন, ডাকসু-হল সংসদ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলেও প্রশাসন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো রেসপন্স (উত্তর) পাইনি। আমাদের আজ লিখিত অভিযোগ দিতে আসতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা সেই এলাকা পরিদর্শন করে সুস্পষ্ট কোনো সিসিটিভির সন্ধান পাইনি। এমন একটা এরিয়া এবং সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এরকম একটা জায়গা অরক্ষিত এবং সিসিটিভি ফুটেজের আওতার বাইরে।

তিনি বলেন, প্রক্টর অফিস আমাদের থেকে দুদিন সময় চেয়েছে। একজন ভুক্তভোগীর জন্য দুইদিন সময়টা অনেক বেশি। ভুক্তভুগী এতটাই ট্রমাটাইজ যে সে এখনও নরমালি কথা বলতে পারছে না। একটা মানুষ কতটা বিদ্বেষ থেকে থুতু নিক্ষেপ করতে পারে– সেটা কল্পনা করাটাও দুরূহ ব্যাপার। সে শুধু থুতু নিক্ষেপ করে এবং গালিগালাজ করে ক্ষান্ত হয়নি, সে তার হাত ধরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে।

সাবিকুন্নাহার তামান্না হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এটার সমাধান যদি না আসে এটা ন্যাশনাল ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে। এটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে এবং আমরা আশা করছি প্রশাসন অবশ্যই এই ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন এবং কোনো ধরনের সহিংসতার ঘটনা পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা তারা নিশ্চয় তৈরি করবেন না।

এর আগে ২৯ অক্টোবর, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে বলেন, ‘ক্লাস শেষে কার্জন থেকে ফিরছিলাম। জুলোজি ডিপার্টমেন্টের (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ) ঐদিকের রাস্তা দিয়ে আসছি, হঠাৎ করেই একজন আপু আমার দিকে থুতু নিক্ষেপ করে বিশ্রী ভাষায় বলে উঠলেন– আরেহ তুই ঐখানকার মেয়ে না? সব পাকিস্তানি! কোথা থেকে মুখ পুড়িয়েছিস যে মুখ ঢেকে রেখেছিস?’

তিনি আরও লিখেন, ‘খপ করে হাত ধরে বলল, হাত কি দেখতে এত খারাপ যে ঢেকে রেখেছিস? আগুনে পুড়েছে নাকি? দেখি দেখি… আরও অনেক বিশ্রী গালি তো আছেই। আমি যে কিছু বলবো মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছে না, শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল। অনেক কষ্টে হাত দুইটা ছাড়িয়ে দৌড়ে হলে এসেছি। এখনও মনে হচ্ছে গালি গুলো কানে ভাসছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *