অপরাধআইন আদালতশ্যামনগরসাতক্ষীরা জেলা

মামলা তুলে না নেওয়ায় বাদির তিন ভাইপোর বিরুদ্ধে শ্যামনগরে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: শ্যামনগর উপজেলার মীরগাং গ্রামে ঘর পোড়ানো মামলা তুলে না নেওয়ায় মামলার বাদির তিন ভাইপোর বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের এক আসামীর মাকে দিয়ে সাজানো ধর্ষণ মামলা করার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, রবিবার (২৬ অক্টোবর) ভোরে মীরগাং গ্রামের কমলেশ গাইনের ছেলে বিকাশ গাইনকে পুলিশ বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরদিন সোমবার বিকেল তিনটার দিকে তাকে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘর পোড়ানো মামলার বাদি দীলিপ গাইন পূর্বে জমি-সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ১৮ অক্টোবর প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় জঙ্গল ভাংগী, সাগর ভাংগীসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। ঘটনার তদন্তে পুলিশ তেমন অগ্রগতি দেখায়নি। এদিকে, অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে বাদিকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। বাদি রাজি না হওয়ায় প্রতিপক্ষরা পাল্টা কৌশলে এক আসামীর মাকে বাদি করে দীলিপ গাইনের ভাইপো বিকাশ গাইনসহ তিনজনের নামে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

পরিবারের দাবি, বিকাশকে আটক করে থানায় নিয়ে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। সমঝোতার চেষ্টা ব্যর্থ হলে পুলিশ ৩৩ ঘণ্টা পর তাকে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়।

কমলেশ গাইন অভিযোগ করে বলেন, “আমার ছেলেকে ঘর পোড়ানো মামলায় জড়ানো প্রতিপক্ষের পক্ষ থেকেই সাজানো ধর্ষণ মামলা দেওয়া হয়েছে।”

এ ঘটনায় ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল বলেন, “ঘর পোড়ানো ও ধর্ষণÑদুটিই ঘটনার সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। স্থানীয়ভাবে সমঝোতার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়।”

এদিকে অভিযোগ রয়েছে, কথিত ভিকটিমকে সোমবার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিলে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক উপস্থিত না থাকায় পুলিশ তাকে ফিরিয়ে নেয়। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রহমান জানান, “চিকিৎসক না থাকলে ভিকটিমকে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করার নিয়ম রয়েছে, ফিরিয়ে দেওয়ার নয়।”

শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম জানান, “ঘর পোড়ানো ও ধর্ষণÑদুটিই ঘটনাই সন্দেহজনক। উভয় পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।”

স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিনের জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং একে অপরকে ঘায়েল করতে মামলার পাল্টা মামলা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *