ইউএনও রনী খাতুন শ্যামনগরের বুকে এঁকে দিলেন ভালোবাসার নতুন চিত্র
শ্যামনগর প্রতিনিধি: ইউএনও রনী খাতুন শ্যামনগরের বুকে এঁকে দিলেন ভালোবাসার নতুন চিত্র। যা শ্যামনগরবাসী কোনদিন ভুলবে না। বিএনপির দু’পক্ষের ইট বৃষ্টির মধ্যে দৌড়ে ভাইরাল বনে যাওয়া ইউএনও মোছাঃ রনী খাতুন চোখের পানিতে বিদায় নিয়েছেন। নুতন ইউএনও দেদারূল ইসলামের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করে আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি শ্যামনগর ছাড়েন। এসময় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষসহ শ্যামনগর চৌরাস্তা এবং শ্যামনগর-কালিগঞ্জ সীমানায় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
সরেজমিনে দেখা যায় ‘দায়িত্ব হস্তান্তর’ করেই রনী খাতুনের শ্যামনগর ছাড়ার কথা থাকলেও তেমনটি হয়নি। বরং দায়িত্ব হস্তান্তরের পর অফিসের বাইরে আসতেই বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষসহ রাজনীতিবিদরা তাকে ঘিরে ধরে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে থাকেন। এসময় সেখানে উপস্থিত অনেক মানুষ বিদায় জানাতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এমনকি সাধারণ কয়েকজন নারী ক্রন্দনরত অবস্থায় তাকে জড়িয়ে ধরে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে থাকেন।
পরবর্তীতে সকলের সাথে নানা বিষয়ে আলোচনা শেষে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর ছেড়ে যান রনী খাতুন। একপর্যায়ে শ্যামনগর উপজেলার প্রান্তঃসীমা মৌতলা এলাকায় পৌছে আবারও আটকা পড়েন তিনি। এসময় প্রখর রোদ্রের মধ্যে সাধারণ মানুষদের ঠাঁয় দাড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি গাড়ি থেকে নেমে আসেন। এসময় সেখানে উপস্থিত উপস্থিত সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিরা পুষ্পস্তবক এবং রনী খাতুনের ছবি সংবলিত শুভেন্যু উঠিয়ে দিয়ে তাকে বিদায় জানান।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা সহকারী কশিমনার (ভুমি) রাশেদ হোসাইন, ই্উএইচএফপিও ডাঃ জিয়াউর রহমান, প্রেসক্লাব সভাপতি সামিউল, এনজিও সমন্বয়ক ইমরান, ব্যবসায়ী সিদ্দিকুল ইসলাম, ফিরোজ হোসেন, অনোয়ার শাহাদাৎ মিঠু, সাংবাদিক জুবায়ের মাহমুদ ও স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা গোলাম মোস্তফাসহ বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায় প্রায় এক মাস আগে মোছাঃ রনী খাতুনকে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বদলী করা হয়েছে। ১১ মাস ১৫ দিন ধরে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট অসংখ্য উন্নয়নমুলক প্রকল্প গ্রহণ এবং সম্পন্নের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।
শ্যামনগর পৌরসভার জন্য সুপেয় পানিসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং ময়লা আবর্জনা ফেলার ভাগাড় তৈরি, যমুনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা এবং পরিবেশ সুরক্ষার উদ্যোগ গ্রহন ছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন মালঞ্চ এবং খোলপেটুয়া নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ জনস্বার্থে অসংখ্য জনহিতকর কাজ করেন সবার প্রিয়পাত্রে পরিণত হন। এর আগে তুমুল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলাকালে নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই বিএনপির বিবাদমান দু’পক্ষের মধ্যে অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষ ঠেকিয়ে রনী খাতুন দেশজুড়ে আলোচিত হয়েছিলেন।

