গাজী হাবিব এর কবিতা: আদিমতার পুনর্জাগরণ
আদিমতার পুনর্জাগরণ
-গাজী হাবিব
সবাই যেন ফিরে যেতে চায়-
হ্যাঁ, ফিরে যেতে চায় আবার,
সেই আদিম অন্ধকারে,
যেখানে ন’গ্নতা ছিল স্বাধীনতা,
পাশবিকতাই ছিল শক্তির প্রতীক!!
আজ আবারও আমরা হাঁটছি সেদিকে।
বুড়িরা ছুড়ি হতে চায়, ছুড়িরা কাবাব!
নারীরা চায় পুরুষের ক্ষমতা-
পুরুষেরা পুতুল!!
সভ্যতার পোশাক খুলে ফেলছে সমাজ-
বে’লে’ল্লাপনা এখন পরিশীলনের সাজ!
এখনকার টিকটক, রিলস্-
ঘরে ঘরে উ’দোম নাচ- অর্বাচীন ইঙ্গিত
সুরে সুরে মিশে যায় উন্মাদনা, তরল
শ্যাম্পেনের ফেনায় ভেসে যায় ধর্মের মুখোশ।
ধবল কবিতা এখন উন্মত্ত নারী–
তার লাগাম যাদের হাতে রাখার কথা-
তারাই কাপড় খুলছে.. লজ্জা খাচ্ছে চিবিয়ে
মঞ্চ কাঁপাচ্ছে দর্শকদের সঙ্গে!!
শব্দহীন চিৎকার ভরে দেয় বাতাস,
কেউ বলে- ‘ভেসে যাচ্ছি আমরা!’ কিন্তু
কে শোনে কার কথা?
মানুষের কানগুলোও বিক্রি হয়ে গেছে
পর্ন – বিজ্ঞাপনের দামে।
পৃথিবী লিখে রাখছে প্রতিটি কৃতকর্ম,
আর আমরা প্রতিদিন দেখি নিজের চোখে প্রতিদান ফিরে আসে- আসছে
তবুও শিখি না কিছুই! তবুও নত হই না!
পশ্চিমের হাওয়ায় উড়ে যায় ঘরের বউ,
ফিরে আসে ফর্তুনের ললনা-
কিন্তু চোখে তার জমে থাকে উন্মত্ততার ধূলো।
যে নারী ছিল পরহেজগার,
যার কণ্ঠ পক্ষীও শুনতে পেত না,
আজ তার গোপন ভিডিওতে
মেতে ওঠে পুরো মহল্লা।
মানুষ হাসে, তালি দেয়,
আর লজ্জা মরে যায় টুকরো হাসির উচ্ছ্বাসে
বিবেক কাঁদে, কেউ শোনে না;
সবাই ব্যস্ত নিজেদের প্রদর্শনীতে।
তবুও আমরা বলি- বলছি–
আমরা সভ্য! আমরা আধুনিক!
আমরা উন্নত!
কিন্তু ভেতরে ভেতরে
আমরা ফিরে যাচ্ছি সেই পুরনো বাগানে-
যেখানে মানুষ ছিল না মানুষ, ছিল শুধু দেহ,
কামনা আর লালসার অনন্ত রাজত্ব।
হ্যাঁ… আদিমতাই ভালোবাসি আমরা,
এটাই আমাদের নতুন সভ্যতা-

