অনলাইনআশাশুনিশিক্ষাঙ্গনসাতক্ষীরা জেলা

আশাশুনির চেঁচুয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপালসহ ৯ পদে অবৈধ নিয়োগ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার: আশাশুনির আনুলিয়ায় অবৈধ উপায়ে গঠিত মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি বাতিল ও কোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রিন্সিপাল সহ নয় পদে অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে আনুলিয়া ইউনিয়নের হাজী মার্কেটে, এলাকার সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি রোকনুজ্জামান খোকনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আনুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস। অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রমজান আলী, অভিভাবক সাইফুল্লাহ সরদার, সমাজসেবক নাজমুল হাসান প্রমূখ।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথি রুহুল কুদ্দুস চেয়ারম্যান বলেন, কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের উদ্দেশ্যে ঢাকা মাদ্রাসা-ই আলিয়ার পদচ্যুত প্রিন্সিপাল ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের দোসর মাওঃ আঃ রশিদ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে এবং অভিভাবক প্রতিনিধি ও অন্যান্য সদস্যদের অগোচরে চেঁচুয়া মদিনাতুল উল্লম্ম ফাজিল মাদ্রাসার অবৈধ উপায়ে সভাপতি হয়ে মাদ্রাসার বিভিন্ন পদে ৯ জন শিক্ষক/ কর্মচারী নিয়োগ বানিজ্য দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, চেঁচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসাটি আশাশুনি উপজেলাধীন আনুলিয়া ইউনিয়নের একমাত্র উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত অত্র মাদ্রাসার সুভাকাঙ্খি নামধারী ব্যক্তিগন নিয়োগ বানিজ্য সহ নানাবিধ দুনিতীর সঙ্গে জড়িত থাকার কারনে নিয়তিম কমিটি দ্বারা পরিচালিত না হয়ে এডহক কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হতো। মাদ্রাসার কোন প্রিন্সিপাল ছিলনা। ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল দ্বারা নিয়ম বর্হিভুত ভাবে পরিচালিত হত।

মাদ্রাসাটিতে ১ম শ্রেনী থেকে ফাজিল পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু থাকলেও কাগজপত্রে চার শতাধিক ছাত্র /ছাত্রী ভর্তি দেখিয়ে বিভিন্ন উপায়ে সরকারী নানান ধরনের সুবিধা ভোগ করে আসছে। প্রকৃত পক্ষে মাদ্রাসায় ১ম শ্রেনী থেকে ফাজিল পর্যন্ত ৭০/৮০ জন ছাত্র/ছাত্রী নিয়মিত নাই।

এমতবস্থায় অত্র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওঃ ওলিউল্লাহ সকল নিয়ম নীতির পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ন গোপনে ৪২১ জন ছাত্র/ ছাত্রী ভর্তি দেখিয়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা তৈরী করে। এলাকার ছাত্র/ ছাত্রীর অভিভাবক বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান দরদীদেব না জানিয়ে গোপনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমানকে প্রিজাইডিং অফিসার বানিয়ে কর্তৃপক্ষের ভুল বুঝাইয়া মাদ্রাসার নিয়মিত কমিটি তৈরী করেছে। যাহা অত্র প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক সদস্য বা এলাকার প্রতিষ্ঠান অনুরাগী কেহই জানে না। গত ইং- ২১/০৫/২০২৫ তারিখে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি করে ০৯ জন শিক্ষক/কর্মচারী নিয়োগের নামে ০২/০৬/২০২৫ ইং তারিখে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন এবং তাদের পছন্দের ব্যক্তি এবং তাদের অনুগত ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়ার নামে কোটি টাকার মত নিয়োগ বানিজ্য শুরু করেছে। যাহা আমরা পত্রিকা প্রকাশিত হওয়ার কয়েক দিন পর জানতে পেরেছি। যাহাদেরকে কমিটির অন্তর্ভুক্ত ফরেছে, যাহাদের একজনের বিরুদ্ধে ২টি মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হয়েছে। বর্তমানে তিনি পলাতক আছে।

অন্যান্য ৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা সহ নানাবিধ মামলা রয়েছে। আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান দরদী এবং অভিভাবক শ্রেনীর ব্যক্তি অত্র বিষয় ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওঃ ওলিউল্লাহ ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমানের নিকট অবৈধ কমিটি তৈরী এবং নিয়োগ বানিজ্যের বিষয় জানতে চাইলে তারা সঠিক তথ্য না দিয়ে আমাদেরকে বলে পত্রিকায় দেখলে সকল বিষয় অবগত হবেন বলে আমাদেরকে হাকিয়ে দেয়।

প্রধান অতিথি বলেন, আমরা মাদ্রাসা সম্পর্কিত সকল বিষয় বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি, আমাদের এলাকার চিহ্নিত দুনিতীবাজ জনৈক মাওলানা নামধারী আঃ রশিদ। যিনি ১৫ই আগষ্টের পূর্বে ঢাকা মাদ্রাসা-ই আলিয়ার প্রিন্সিপাল ছিলেন। ০৫ই আগষ্ট এর পর ঢাকা বাসীর জনরোশে চাকুরীচ্যুত হয়ে পালিয়ে এসেছে। উক্ত দুনিতীবাজ আওয়ামী দোসর ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারী মাওঃ আঃ রশিদকে অত্র মাদ্রাসার সভাপতি হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে এবং সঙ্গে অত্র কমিটিতে একজন ফেরোয়ারী আসামী এবং কমিটির অধিকাংশ সদস্য একই পরিবারের ব্যক্তিদের নিয়ে অত্র মাদ্রাসার পুর্নাঙ্গ কমিটি সাজিয়েছে।

মানববন্ধন থেকে আশাশুনি উপজেলাধীন আনুলিয়া ইউনিয়নের চেঁচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল পূর্বক অবৈধ অনৈতিক উপায়ে তৈরীকৃত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেতাত্তা মাওঃ আঃ রশিদ এর সভাপতি পদ সহ ম্যানেজিং কমিটি বাতিল দাবি জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *