সাতক্ষীরার ব্রহ্মরাজপুরে দোকান দখলের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত-১০
স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরার সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর বাজারে দোকানঘর দখলকে কেন্দ্র করে দুই সহোদর পরিবারের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে পর্যায়ক্রমে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় এজাহার দায়ের করেছেন আহত নজরুল ইসলাম।
এজাহার সুত্রে জানা যায়- সদর উপজেলার ওমরাপাড়া গ্রামের মৃত সৈয়দ আলী সরদারের দুই ছেলে- বড়পুত্র নবাত আলী সরদার (৬০) এবং ছোটপুত্র নজরুল ইসলাম (৫০)-এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি ও দোকানঘর দখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে উভয়পক্ষ আদালতে মামলা-জটের মধ্যে রয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ব্রহ্মরাজপুর বাজারসংলগ্ন একটি বেকারির দোকান খোলাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা শুরু হয়। খবর পেয়ে নবাত সরদারের পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
নজরুল ইসলামের পক্ষের মারাত্বক আহতরা হলেন- নজরুল ইসলাম (৫০) – দা-এর কোপে মাথায় হাড়কাটা জখম, ভাতিজা মোঃ আলাউদ্দিন (৩৫)- লোহার রডে মাথায় গুরুতর জখম, অপর ভাতিজা মোঃ সালাউদ্দিন (৩৭)- দা-এর আঘাতে রক্তাক্ত জখম ও জামাতা আব্দুল আহাদ (৪৫)- মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারাত্বক আহত হয়েছে। এরা সবাই সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অন্যদিকে নবাত আলীর পক্ষের আহতরা হলেন- নোবাত আলী সরদার (৬০), সেলিম হোসেন বাবু (৪০), শিমুল হোসেন (৩৫), শামীম হোসেন (৩০), স্ত্রী রিজিয়া বেগম এবং তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী রবিউল ইসলাম (৪৫)। এদের সামান্য আঘাত লাগলেও নবাত আলীর বউমা জোসনা খাতুন মেডিকেলের নার্স হিসেবে কর্মরত থাকায় সেখানে ভর্তি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় চায়ের দোকানে ১২–১৩ জন আহত হন, এর মধ্যে ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কেটলির গরম পানিতে একজন আহত হয়েছেন। তবে এসিড নিক্ষেপের গুজবের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সংঘর্ষের সময় বড়ভাই নবাত আলী সরদার ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে এবং তার জামাতার কাছ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে।
জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামিনুল হক জানান- এজাহার আমরা পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন- সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাজার কমিটির সদস্য রবিউল ইসলামের চায়ের দোকানে প্রথমে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে নবাত সরদারের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসলে সংঘর্ষের শুরু হয়। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ না নিলে পরবর্তীতে এর থেকেও বড় ধরনের ঘটনা পুনরায় ঘটতে পারে।
আহতদের মধ্যে মোঃ আলাউদ্দিনের অবস্থা সবচেয়ে আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সকল আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।

