কালিগঞ্জে জমির মালিকানা নিয়ে দু,পক্ষের রশি টানাটানি, পরিদর্শনে ইউএনও
তাপস কুমার ঘোষ, কালিগঞ্জ: পানি নিষ্কাশনের সরকারি খাস খাল দাবী করা ৩০.০৬ একর অর্থাৎ ৯০ বিঘা বিরোধীয় জমির মালিকানা নিয়ে দু,পক্ষ সরকার-জনগণের রশি টানাটানি। জনরোষ ঠেকাতে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে জনগণের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরিদর্শনে জান ইউএনও।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা ২ টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল রোদবৃষ্টি উপেক্ষা করে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঐ সময় ভুমি মালিকরা এবং জনগণ জমির মালিকানা নিয়ে পরস্পর মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য রাখেন।
স্থানীয় মথুরেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম, আব্দুর রব, ইউপি সদস্য আবু হাসান, সাবেক ইউপি সদস্য বদরু, গিয়াস উদ্দিন, মনিরুল ইসলাম সহ স্থানীয় জনগণের দাবি বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য মুকুন্দপুর সরকারি খাসখাল ব্যবহৃত হতো বর্তমান সেটা বন্ধ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে উপজেলার ছনকা গ্রামের শেখ রহমত আলী, আব্দুল গাফফার গংদের পক্ষে শেখ মোস্তাহিদ রহমান ওরফে লিটনের দাবি এটা তাদের ক্রয় করা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি। কালিগঞ্জ উপজেলার মুকুন্দপুর মৌজার এস এ ১/১ নং খতিয়ানের খারিজ মতে ৪৯২,৪৯৩ ডিপি খতিয়ান ৭৮,৪৪০,৪৪২,৪৪১ সাবেক দাগ ৭২৪,৭৩০,৭৩৩,২০৬,৩৭৮,২৬৯,৩৮০,,১১৩/৪০৪,৩৭৮,৪৪৪ বর্তমান ১২৩৮,১২৫৫ ও ১৩৪৩ দাগে ১০.১৭ একর জমি তাদের ব্যক্তি মালিকানা বলে দাবি করেন। তারা বলেন উক্ত জমি তৎকালীন সরকারের জমিদার নরেশ চন্দ্র বসুর নামে এস এ খতিয়ান ছিল । জমিদার নরেশ চন্দ্র বসু ভারতে চলে যাওয়ায় ১৯৬৬ সালে তৎকালীন সরকার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বন্দোবস্ত দিলে উক্ত সম্পত্তি ছনকা গ্রামের আব্দুল গফফার এবং রহমত গংরা ১০ বছরের রেওয়াতী বন্দোবস্ত সেলামির মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করে এডিসি রেভিনিউ সাতক্ষীরার নিকট থেকে ৬৮৫/১৯৬৭,৬৮৬/১৯৬৭ নং ২ টি দলিলে ১৯৭৭ সালে সরকার আমাদের অনুকূলে রেজিস্ট্রি করে দেয়। সেই থেকে আমরা উক্ত জমি নিজ নামে রেকর্ড ,খাজনা পরিশোধ নাম পত্তন করে ভোগ দখলে আছি।
বর্তমান বিষয়টি নিয়ে গত ২৭/২/২০১৭ ইং তারিখে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে দায়ের করা সিভিল রিভিশন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তফসিলভুক্ত জমির উপর Let the order of status quo be extended till disposal of the rule. উক্ত আদেশ উপেক্ষা করে ২০২০ সালে তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী কোটি টাকা আত্মসাৎ এর জন্য খালকাটা প্রকল্প এনে জনগণ নিয়ে মব সৃষ্টি করে দায় সারাভাবে খাল কাটে। যার প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব )মাহবুবুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল, সহকারি কমিশনার (ভূমি) সিফাত উদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান , বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম ,সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান এবং হাবিবুল্লাহ সহ ৯ জনের নামে আদালতে অবমাননার মামলা চলমান আছে। বর্তমান একটি স্বার্থন্বেষী গোষ্ঠী মুকুন্দপুর বিলের পানি নিষ্কাশনের খাল থাকলেও বিভিন্ন মব সৃষ্টি করে প্রশাসনকে ব্যবহার করে জমি দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মণ্ডল বলেন বিষয়টি আমার জানা নাই । আমি ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সরেজমিনে ঘুরে দেখলাম। উচ্চ আদালতের আদেশের বিষয়টি আমার কাছে এসেছে এখনো আমি দেখেনি দেখে উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সঠিক বিষয়টি পরে জানানো হবে।