অনলাইনআইন আদালতজাতীয়

সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জন গ্রেপ্তার

ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানবিষয়ক গোলটেবিল আলোচনা থেকে আটক আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখাবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, হেফাজতে থাকা ১৬ জনের সবাইকে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।

ডিআরইউ ভবনের শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক ওই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজক ছিল ‘মঞ্চ ৭১’ নামের একটি সংগঠন। গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু কামাল হোসেন এবং সভার অন্যতম আয়োজক আইনজীবী জেড আই খান পান্নার আসতে বিলম্ব হওয়ায় সভা শুরু হতে দেরি হয়।

এর মধ্যে সভায় চলে আসেন ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, সাংবাদিক মাহবুব কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনসহ অনেকে। বেলা ১১টার দিকে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

আয়োজকদের একজন অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বীর প্রতীকের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, একটা শক্তি মুক্তিযুদ্ধকে, একাত্তরকে চব্বিশের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়। তারা বাংলাদেশের বিরোধী শক্তি। তারা বাংলাদেশের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দিতে চায়। বাংলাদেশকে নাই করে দেওয়ার পেছনে এই শক্তি জামায়াত-শিবির। আর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিছু বিভ্রান্ত বাম তাত্ত্বিক।

শেখ হাফিজুর রহমানের বক্তব্য শেষ হলে সাংবাদিক মাহবুব কামালের নাম ঘোষণা হয়। এর মধ্যেই এক দল ব্যক্তি হট্টগোল করে স্লোগান দিয়ে সভাস্থলে ঢুকে পড়েন। এ সময় তারা হ্যান্ডমাইকে ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, ‘জুলাইয়ের যোদ্ধারা, এক হও লড়াই করো’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের কেউ কেউ লাঠিসোঁটা নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে পড়েন। একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানস্থলের দরজা বন্ধ করে দেন এবং আয়োজকদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু করেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কয়েকজনকে লাঞ্ছিতও করেন নিজেদের জুলাই যোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দেওয়া এই ব্যক্তিরা। পরে তারা আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে দেখে উত্তেজিত হয়ে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যান। লতিফ সিদ্দিকীর উদ্দেশে একজন বলেন, ‘তুই ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসন করতে আসছিস। নাস্তিক কোথাকার! তুই হজ নিয়ে কটূক্তি করিস।’

হট্টগোলকারীরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে অতিথিদের অনেককেই বের করে দেওয়া হলেও আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে পুলিশ এসে তাদের দুজনসহ অন্তত ১০ জনকে নিরাপত্তার খাতিরে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *