অনলাইনঅপরাধইতিহাস ঐতিহ্যজাতীয়জীবনযাপনরাজনীতিশ্যামনগরসাতক্ষীরা জেলাসারাবাংলা

‘উপকূলবন্ধু’র মুখোশ উন্মোচন: এনজিওর নামে অনুদান আত্মসাত, খাস জমি দখল ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে মোস্তফা নুরুজ্জামান

এম আব্দুর রহমান বাবু, শ্যামনগর: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, সুন্দরবন সুরক্ষা ও বনায়নে অবদানের কথা তুলে ধরে সুশীলনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী প্রধান মোস্তফা নুরুজ্জামানকে সম্প্রতি ‘উপকূলবন্ধু’ উপাধি দিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জে বনজীবী সম্প্রদায়ের আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে তাঁকে স্মারক ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।

তবে এ আয়োজনকে কেন্দ্র করে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সংবর্ধনার আড়ালে মোস্তফা নুরুজ্জামান নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে বিপুল অর্থ ব্যয় করেছেন। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তিনি এনজিওর নামে বিদেশি অনুদান আত্মসাৎ, সরকারি খাস জমি দখল এবং বেনামে শত শত বিঘা জমির মালিকানা গ্রহণ করেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ১৯৯১ সাল থেকে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ক্ষমতায়ন ও জলবায়ু অভিযোজনের নামে নানা প্রকল্প চালালেও বাস্তবে বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। সুশীলনের নামে পরিচালিত কিছু প্রকল্পে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ রয়েছে বলে একাধিক সচেতন নাগরিক অভিযোগ তুলেছেন।

এছাড়া সুন্দরবন সুরক্ষা ও নতুন বনায়নের নামে স্থানীয় বনজীবীদের উচ্ছেদ এবং সরকারি খাস জমি দখল করার কথাও এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। তাদের ভাষ্য, মোস্তফা নুরুজ্জামান এনজিও কার্যক্রমের আড়ালে জমি ক্রয়-বিক্রির ব্যবসা গড়ে তুলেছেন এবং বর্তমানে বেনামে শত শত বিঘা জমির মালিক হয়েছেন।

স্থানীয় সমাজকর্মী ও সাংবাদিক মহল বলছে, যাকে আজ ‘উপকূলবন্ধু’ বলা হচ্ছে, তার কর্মকাণ্ডের মধ্যেই উপকূলবাসীর জন্য ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তারা দাবি করেছেন, এসব অভিযোগের সঠিক তদন্ত হওয়া জরুরি।

অনুষ্ঠানকে ঘিরে একদিকে আবেগঘন পরিবেশ থাকলেও অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, “নিজের টাকা খরচ করে আয়োজন করে নিজেকে উপকূলবন্ধু দাবি করা কোনো সম্মান নয়, বরং এটি একটি প্রহসন।”

এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন সচেতন মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *