অনলাইনআন্তর্জাতিকরাজনীতি

ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে : যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িতেদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার খুবই কম পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে দেশটি।

২০২৪ সালে ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বেআইনি বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নিখোঁজ হওয়া, নির্যাতন বা অমানবিক আচরণ, বেআইনি গ্রেপ্তার বা আটকসহ ভারতে নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।

গত মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। মানবাধিকার-বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক এই প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিস্টান কুকি ও প্রধানত হিন্দু মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সংঘাত চলতে থাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।

কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী দুই পক্ষের মধ্যে বাফার জোন বজায় রাখলেও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত সংঘাতে ৪৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। সংঘাত নিরসনে সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ স্টান গান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে।

এছাড়া বিক্ষোভের পর রাজ্যের কিছু এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে সরকার। মণিপুরে মানবিক সহায়তা ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত একটি প্যানেলও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার উদ্বেগের মধ্যে বেআইনি বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নিখোঁজ হওয়া, নির্যাতন বা অমানবিক আচরণ, বেআইনি গ্রেপ্তার বা আটক, বিদেশে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তঃদেশীয় দমন, সংঘাতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন, মাওবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোতে শিশুদের অবৈধভাবে নিয়োগ বা ব্যবহার, মতপ্রকাশ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় গুরুতর বাধা- যার মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর হামলা বা হত্যার হুমকি, অযৌক্তিক গ্রেপ্তার বা মামলা, সেন্সরশিপ- এবং জোরপূর্বক গর্ভপাত বা বন্ধ্যাকরণের ঘটনাও রয়েছে।

মানবাধিকার-বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের শনাক্ত ও শাস্তি দিতে মোদি সরকার খুবই সীমিত ও অপ্রতুল পদক্ষেপ নিয়েছে।

এছাড়া জম্মু-কাশ্মির, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এবং মাওবাদী সন্ত্রাসপ্রবণ এলাকায় সন্ত্রাসীরা নৃশংসতা চালিয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মিরে তারা ২০ জন নিরাপত্তা সদস্য ও ১৮ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। এছাড়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতার খবরও পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত এসব অপরাধের তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম চালিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *