তালার ২ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি: চরম বিপাকে কৃষক ও মৎস্য চাষিরা
শাহিন বিশ্বাস: যশোরের ভদ্রা নদীর উজানে পানি বৃদ্ধির ফলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন সহ ১০টি গ্রামের প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ গত এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শুভাশুনি থেকে শিরাশুনি সেতু বাজার, হিজলডাঙ্গা হয়ে কেশবপুরের বাওশুলা পর্যন্ত পাকা রাস্তার বেশিরভাগ অংশ হাঁটু বা তার চেয়েও বেশি পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। বসতবাড়ি ও উঠানে পানি উঠে যাওয়ায় মশা, সাপ ও পানি বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ৩-৪ দিনের তুলনায় পানি আরও বেড়েছে। ফলে কৃষকের সবজির ক্ষেত, আমন ধান ও পাটের জমি পানির নিচে চলে গেছে। মাছ চাষিরাও পড়েছেন চরম ক্ষতির মুখে। হিজলডাঙ্গা গ্রামের মৎস্য চাষি আলামিন জানান, “জোয়ারের পানির ঢলে আমার ৩০০ বিঘা ঘের ভেসে গেছে। চারা মাছ ছিল ২৪ লাখ টাকার, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খরচ ১০ লাখের বেশি। এনজিও ও ব্যাংক মিলিয়ে ১৫ লাখ টাকা ঋণ আছে। আমি এখন দিশেহারা।”
স্থানীয় বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, “এই অবস্থায় কেউ মারা গেলে দাফনের জায়গাও পাওয়া যাচ্ছে না। মাটি দেওয়ার মতো স্থান নেই।”
শিরাশুনী গ্রামের আখতারুজ্জামান জানান, “গ্রামের চলাচলের রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে, কাঁচা ফসল পচে নষ্ট হচ্ছে। লাউতারা, সুভাষুনি, কাকুড়পাড়া ও আশেপাশের গ্রামগুলোতে আউশ ও আমন ধান পানির নিচে।”
এ বিষয়ে তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জরুরি মিটিংয়ে থাকার কথা জানান।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপা রানী সরকার জানান, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে কচুরিপানা অপসারণের কাজ চলছে। তিনি কয়েকবার এলাকা পরিদর্শন করেছেন এই নিউজ লেখা পর্যন্ত গতকাল মঙ্গবার বিকাল ৪টায় শিরাশুনী এলাকায় পরিদর্শনে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
পানিবন্দি মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জরুরি সহযোগিতা চেয়েছেন স্থানীয়রা।