সদরসাতক্ষীরা জেলা

সাতক্ষীরায় “জুলাইয়ের মায়েরা”: গৌরবগাঁথার সাক্ষ্য বহন করা এক অনন্য সমাবেশ

গাজী হাবিব: একটি জাতির ইতিহাসের পেছনে থাকে কিছু অশ্রু, কিছু রক্ত, আর কিছু মা—যারা বুক চিতিয়ে সন্তানের দেশপ্রেমে পাশে দাঁড়ান। তেমনই কিছু মাকে নিয়ে সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত হলো “জুলাইয়ের মায়েরা” শীর্ষক এক অভিভাবক সমাবেশ ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী।

শনিবার (২ আগস্ট) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জেলা তথ্য অফিসের যৌথ আয়োজনে আয়োজিত হয় এই আবেগঘন সমাবেশ।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ ইমরান হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রিপন বিশ্বাস, জেলা তথ্য অফিসার মো. জাহারুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজমুন নাহার, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ফাতেমা জোহরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক মো. আরাফাত হোসেন, মুজাহিদুল ইসলাম, মুখপাত্র মোহিনী তাবাচ্ছুম, ৪ জন শহীদ জননী শাহানারা খাতুন, নুরুন্নাহার বেগম, আনোয়ারা বেগম ও রাশিদা খাতুনসহ আহত ছাত্রদের মায়েরা।

স্মৃতির ঝাঁপি খুলে ‘জুলাই আন্দোলন’-এর আহত যোদ্ধারা এবং তাঁদের মায়েরা শোনান তাদের ত্যাগ, সাহস আর বেদনার গল্প। কারও সন্তান গুলি খেয়েছে রাজপথে, কেউ কারাগারে ঠাঁই পেয়েছে, আবার কেউ হারিয়েছে নিজের ভবিষ্যৎ। অথচ এই মায়েরা ভাঙেননি। বলেছেন— “আমাদের ছেলেরা দেশের জন্য বুক পেতে দিয়েছিল, আর আমরা দিয়েছি তাদের সাহস আর আশ্রয়।”

সমাবেশে প্রদর্শিত হয় আন্দোলনভিত্তিক একটি হৃদয়ছোঁয়া প্রামাণ্যচিত্র, যা আন্দোলনের দিনগুলোর সাহসিকতা ও করুণ বাস্তবতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

এই আয়োজন শুধু একটি স্মরণসভা নয়—এ যেন এক জীবন্ত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। জেলা প্রশাসনের এমন মানবিক উদ্যোগে “জুলাইয়ের মায়েরা” সম্মানিত হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁদের চোখে জল, কণ্ঠে কাঁপন, তবুও গর্ব—কারণ তাঁদের সন্তানেরা লড়েছিল দেশের জন্য।

এই আয়োজন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরেছে এক বিস্মৃতপ্রায় অধ্যায়—যা শুধু ইতিহাস নয়, গৌরব, ত্যাগ আর ভালোবাসার নিদর্শন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *